কুফার গভর্নর আবু মুসা (আবদুল্লাহ ইবনে কায়েস) আশারীর কাছে লেখেছিলেন যখন আমিরুল মোমেনিন জানতে পারলেন যে, তার আহবানে জামাল যুদ্ধে যোগদান না করার জন্য সে জনগণকে প্ররোচিত করছে।
আল্লাহর বান্দা আমিরুল মোমেনিনের কাছ থেকে আবদুল্লাহ ইবনে কায়েসের প্রতিঃ
তুমি যে সব কথা বলছো আমি তা জানতে পেরেছি। এগুলো তোমার অনুকূলেও যায় আবার তোমার বিরুদ্ধেও যায়।” সুতরাং আমার বার্তাবাহক তোমার কাছে পৌছা মাত্ৰই নিজে প্রস্তুত হয়ে তোমার আডডা থেকে বেরিয়ে এসো এবং তোমার সাথে যারা আছে তাদের আহবান করো। তারপর যদি তুমি সত্য বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ী হও তবে রুখে দাড়াও আর যদি কাপুরুষতায় আচ্ছন্ন হও তবে ফিরে যেয়ো। আল্লাহর কসম, তুমি যেখানেই থাক না কেন তোমাকে ধরা হবে এবং তোমার গদিসহ তোমাকে সম্পূর্ণরূপে উল্টে না দেয়া পর্যন্ত ছাড়া হবে না। তখন তুমি পিছন থেকে যেরূপ ভয় পাও সম্মুখ থেকেও সেরূপ ভয় পাবে।
যা তুমি আশা করছো তা কিন্তু সহজসাধ্য ব্যাপার নয়; বরং তা মারাত্মক দুর্যোগ। আমাদেরকে এ দুর্যোগের উটে চড়তে হয়েছে, দুর্যোগ উৎরে যেতে হয়েছে এবং এর পাহাড়-পর্বতকে সমতল করতে হয়েছে। তোমার মনকে স্থির কর, নিজের কর্মকাণ্ডকে সঠিকভাবে আঁকড়ে ধর এবং তোমার ভাগ্যের অংশ অজর্ন কর। যদি তুমি এটা পছন্দ না কর। তবে সেখানে চলে যাও যেখানে তোমাকে স্বাগতম জানানো হবে এবং তুমি তোমার কর্মকাণ্ডের ফল থেকে নিস্তার পাবে। একাকী ঘুমিয়ে পড়ে থাকা অনেক ভাল। সে ক্ষেত্রে কেউ জানতে চাইবে না। অমুক কোথায়। আল্লাহর কসম, সঠিক ব্যক্তির কাছে এটাই সঠিক বিষয় এবং ধর্মত্যাগীরা কী করে, তা আমরা পরোয়া করি না। এখানেই শেষ করলাম।
১। আবু মুসা আশারী উসমান কর্তৃক নিয়োগকৃত কুফার গভর্নর ছিল। বসরার বিদ্রোহ দমনের জন্য আমিরুল মোমেনিন যখন মনস্থ করলেন তখন আশারী এক দিকে বলতে লাগল যে তিনিই সত্যিকার ইমাম এবং তাঁর বায়াত গ্রহণ করা সঠিক পদক্ষেপ। অপরদিকে সে ছড়াতে লাগল যে, আমিরুল মোমেনিনের সমর্থনে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ন্যায়-সঙ্গত নয়। তার এ দ্বিমুখী আচরণ ও কুটকৌশলের কথা জানতে পেরে আমিরুল মোমেনিন ইমাম হাসানের মাধ্যমে তাকে এ পত্র দিয়েছিলেন। সে ফেতনা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল এবং তা বন্ধ করে দেয়া অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। বিষয়টা এমন ছিল যে, আমিরুল মোমেনিন সঠিক ইমাম হলে তার শত্রুর সাথে লড়াই করা কিভাবে অন্যায় কাজ হবে? আবার তার পক্ষালম্বন করে যুদ্ধ করলে যদি অন্যায় হয় তবে তিনি কিভাবে সঠিক ইমাম হতে পারেন?
যাহোক, তার প্ররোচনা সত্ত্বেও কুফার বিপুল সংখ্যক লোক আমিরুল মোমেনিনের পক্ষে যুদ্ধে যোগদান করেছিল এবং বসরাবাসীকে চিরতরে শিক্ষা দিয়েছিল।