১। গৃহ যুদ্ধের (Civil disturbance) সময় উষ্ট্র শাবকের (labun) মতো হয়ে যেয়ো, যার পিঠ এমন শক্ত নয় যাতে চড়া যায় অথবা বাট এমন নয় যা দোহন করা যায়” ।
(১) এর অর্থ হলো গৃহযুদ্ধ বা অ তৃন্তরীণ কোন্দলের সময় মানুষকে এমনভাবে আচরণ করতে হয় যাতে করে তার কোন গুরুত্ব আছে বলে মনে না হয়। তখন সকলে তাকে উপেক্ষা করে যাবে। কোন পক্ষে তার যোগদান করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হবে না। কারণ ফেতনার সময় এরূপ নির্লিপ্ততা উৎপীড়ন থেকে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে যখন দ্বন্দু বাধে তখন নির্লিপ্ত থাকা অন্যায়। অবশ্য ন্যায় আর অন্যায়ের দ্বন্দুকে গৃহ কোন্দল বলা যায় না। এ অবস্থায় ন্যায়ের সমর্থনে রুখে দাঁড়ানো এবং অন্যায় অবনমিত করা অবশ্য কর্তব্য। উদাহরণ স্বরূপ-জামাল ও সিফফিননের যুদ্ধে ন্যায়কে সমর্থন করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ফরজ ছিলো।
২। যে লোভে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে সে নিজকে অবমূল্যায়ন করে; যে নিজের অভাব অনটনের কথা প্রকাশ করে সে নিজকে অবমানিত করে; আর যার জিবহা আত্মাকে পরাভূত করে তার আত্মা দুষিত হয়ে পড়ে।
৩। কৃপণতা লজ্জা, কাপুরুষতা ত্রুটি; দারিদ্র একজন বুদ্ধিমান লোককেও তার নিজের বেলায় যুক্তি প্রদর্শন করতে ব্যর্থ করে এবং দুঃস্থ ব্যক্তি তার নিজের শহরেও আগন্তুকের মত।
৪। অযোগ্যতা বজাঘাত, ধৈর্য সাহসিকতা, মিতাচার ধন-সম্পদ, আত্মপ্রত্যয় বর্ম এবং সর্বোত্তম সাথি হলো আল্লাহর ইচ্ছায় সম্পর্কিত হওয়া।
৫। জ্ঞান শ্রদ্ধাহঁ সম্পত্তি, সদাচরণ নতুন পোষাক এবং চিন্তা স্বচ্ছ আয়না।
৬। জ্ঞানীদের বক্ষ তার গুপ্ত বিষয়ের সিন্দুক; প্রফুল্লতা বন্ধুত্বের বন্ধন; কার্যকর ধৈর্য সকল দোষক্রটির কবর।
৭। বদান্যতা কার্যকর চিকিৎসা; এ জীবনের আমল পরকালে চোখের সামনে দেখতে পাবে।
৮। মানুষ কী আশ্চর্যজনক যে, সে চর্বি আর এক টুকরা মাংস দ্বারা কথা বলে, একটা হাড় দ্বারা শুনে এবং একটা ছিদ্র দ্বারা শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়।
৯। কারো ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে পৃথিবী যখন অনুকূলে আসে তখন অন্যের ভালো কাজের সুকীর্তি তার নামে হয়; আর পৃথিবী প্রতিকূলে গেলে নিজের ভালো কাজের সুনাম থেকে সে বঞ্চিত হয়।
১০। মানুষের সাথে দেখা হলে এমন আচরণ করবে যেন তোমার মৃত্যুতে তারা কাদে এবং তুমি বেঁচে থাকলে তারা তোমার দীর্ঘায়ু কামনা করে।
১১। প্রতিপক্ষের ওপর জয়ী হলে তাকে ক্ষমা করো।
১২। সব চাইতে অসহায় সেই ব্যক্তি যার কিছু ভ্রাতৃ-প্রতিম বন্ধু নেই; কিন্তু আরো অসহায় সেই ব্যক্তি যে এহেন বন্ধুত্ব হারায়।
১৩। অকৃতজ্ঞতা বশত ছোট-খাট আনুকূল্যকেও ঠেলে ফেলে দিয়ো না।
১৪। আপনজন যাকে পরিত্যাগ করে দূরবর্তীগণের সে প্রিয় হয়।
১৫। ফেতনাবাজাদেরকে পুনঃপ্রমাণ করতে হয় না—একবারেই ধরা পড়ে।
১৬। সকল বিষয় অদৃষ্টের নিয়ন্ত্রণাধীন; বিষয়টি এতদূর যে, কখনো কখনো চেষ্টার ফলশ্রুতিতে মৃত্যু হয়।
১৭। “বৃদ্ধ বয়স ঢেকে ফেল এবং ইহুদীদের অনুকরণ করো না” রাসুলের (সঃ) এ উক্তির বিষয়ে কেউ একজন জিজ্ঞেস করলে আমিরুল মোমেনিন বলেন, রাসুল (সঃ) যখন একথা বলেছিলেন তখন মুষ্টিমেয় কজন দ্বিনের অনুসারী ছিল, এখন এর বিস্তৃতি বেড়েছে এবং প্রত্যেকে তার ইচ্ছামত স্বাধীনভাবে চলতে পারে।
১৮। ন্যায়কে ত্যাগ করলেও অন্যায়ের সমর্থন করো না ।
১৯। যে ব্যক্তি লাগাম কষে ধরে ঘোড়া দৌড়ায় সে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়।
২০। বিবেচক লোকের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করো, কারণ তারা ভ্রমে নিপতিত হলে আল্লাহ তাদের তুলে আনেন।
২১। ভয়ের ফলাফল হলো হতাশা এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা হলো নৈরাশ্য। সুযোগ মেঘের মতো বয়ে যায়। কাজেই উত্তম সুযোগের সদ্ব্যবহার করো।
২২। আমাদের অধিকার আছে। যদি তা দেয়া হয় তবেই ভালো, অন্যথায় আমরা উটের পিছনের অংশে চড়ার মতো হব। তাতে আমরা হাল ছেড়ে দেব না-রাতের ভ্ৰমণ যতই লম্বা হউক (যতই কষ্টকর অবস্থা হোক না কেন)।
২৩। যার কর্ম তৎপরতা নিম্নমানের তার বংশ মর্যাদার জন্য তাকে উচ্চ মর্যাদা দেয়া যায় না।
২৪। শোকাহতের শোক উপশম করা ও দুঃখ-দুর্দশা বিমোচন করা মানেই পাপস্থলন।
২৫। হে আদম সন্তান, তোমাদের মহিমান্বিত প্রভু তাঁর নেয়ামত তোমাদের দান করে যাচ্ছেন। অথচ তোমরা তার নাফরমানি করছে। তোমরা আল্লাহকে ভয় করা।