হাদিসে সাকালাইন —
মহানবী (সাঃ) বলেন যে –
” হে মানবসকল , নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ (সাকালাইন) রেখে যাচ্ছি , যদি এই দুইটি আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না । প্রথমটি হচ্ছে , পবিত্র কোরআন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে , আমার ইতরাত , আহলে বাইত (রক্তজ বংশধর) । নিশ্চয়ই এই দুইটি জিনিষ হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে বিছিন্ন হবে না ” ।
সূত্র – সহীহ তিরমিজি , খন্ড – ৬ , হাদিস – ৩৭৮৬ , ৩৭৮৮ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / মেশকাত , খন্ড – ১১ , হাদিস – ৫৮৯২ , ৫৮৯৩ (এমদাদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ২ , পৃষ্ঠা – ১৮১ , ৩৯৩ (ইফাঃ) / তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী ) , পৃষ্ঠা – ১২ , ১৩ (হামিদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড – ৪ , পৃষ্ঠা – ৩৩ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম) / মাদারেজুন নাবুয়াত , খন্ড – ৩ , পৃষ্ঠা – ১১৫ (শায়খ আব্দুল হক দেহলভী) / ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ) , খন্ড – ১ , পৃষ্ঠা – ৫৬৬ / মুসলিম মুসনাদে আহমদ / নাসাঈ / কানযুল উম্মাল / তাফসীরে ইবনে কাছির / মিশকাতুল মাছাবিহ / তাফসীরে কবির ।
মহানবী (সাঃ) তখন সকল সাহাবাদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন , “ এখানে উপস্থিত লোকদের উচিত অনুপস্থিতদের কাছে আমার এই বাণী পৌছিয়ে দেয়া , কেননা যাদের কাছে পৌছানো হবে , তাদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি এমন আছে যে , শ্রবণকারীর চাইতে সংরক্ষণের দিক থেকে অধিক যোগ্য । আর তোমরা যেন আমার পরে কাফের হয়ে যেও না ।”
অর্থাৎ কুফরী আচরণে তৎপর হইও না।
সূত্র – সহীহুল বুখারী, খঃ-২ , হাঃ-১৭৩৯-১৭৪১, (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) / সহীহ্ আল বুখারী , খ-২ , হাঃ-১৬১৯-১৬২১ , (আধুনিক, ১৯৯৮ইং) / বোখারী , খঃ-৩, হাঃ-১৬৩০-১৬৩২, (ই,ফাঃ, ২০০৩ইং) / সহীহ বোখারী শরীফ , পৃঃ-২৭৭ , হাঃ-১৬১৯-১৬২১ (সকল খন্ড একত্রে, তাজ কোং, ২০০৯ ইং) ।
সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষন –
পথভ্রষ্টতা থেকে মুক্তি পাওয়ার সনদ হচ্ছে , মহানবী (সাঃ) এর রক্তজ বংশধর তথা পুতঃপবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও অানুগত্য করা ।
এই সাবধান বানী মহানবী (সাঃ) সেই সময় সকল সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন । অর্থাৎ মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইতের অনুসরন ও আনুগত্য করা সাহাবীগনের জন্যও বাধ্যতামূলক ছিল ।
এই অবস্থায় আমরা যদি মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও আনুগত্য না করি , তাহলে পথভ্রষ্টতা থেকে আদৌ কি মুক্তি পাব ?
আল্লামা সানাউল্লাহ পানিপথী তার তাফসীরে মাযাহারীতে লিখেছেন –
” নবীজী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) এর কথা এজন্যে তাগিদ করেছেন যে , হেদায়েত ও ইমামত তথা বেলায়েতের বিষয় আহলে বাইত (আঃ) গনই একমাত্র পথপ্রর্দশক ” ।
সূত্র – তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ২ , পৃষ্ঠা – ৩৯৩ (ইফাঃ) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড – ৪ , পৃষ্ঠা – ৩৩ ।
পাঠক ,
সিদ্বান্ত এখন সম্পূর্ন আপনার ব্যক্তিগত ।
কারন ইসলাম ধর্মে কোন জোরজবরদস্তি নেই ।
পরিশেষে –
পবিত্র কোরআনের এই আয়াতটি উল্লেখ করে আপাতত বিদায় —
“— থামাও তাদের , কারন তাদের অবশ্যই প্রশ্ন করা হবে — ” ।
সুরা – সাফফাত , আয়াত – ২৪ ।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) বর্ননা করেন যে ,
তাহাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হইবে অর্থাৎ হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (আঃ) এর বেলায়েত বা ইমামতের ব্যাপারে তাহাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হইবে ।
ইহা আবু সাঈদ খুদরী , মুনদিল আনযী , সাঈদ বিন যোবাইর বর্ননা করিয়াছেন ।
সূত্র – সাওয়ায়েকে মুহরিকা , পৃ- ৮৯ / ফুসুলুল মোহিম্মা , পৃ- ১৩ / নুরুল আবসার , পৃ- ১৩ / তাফসীরে আলুসী , ২৩ তম খন্ড , পৃ- ৭৪ / মুরাজেয়াত , পৃ – ৫৮ / তাফসীরে কুমী , ২য় খন্ড , পৃ- ২২২ / শাওয়াহেদুত তানযিল , ২য় খন্ড , পৃ- ১০৬ / গায়াতুল মোরাম , পৃ – ২৫৯ / তাফসীরে ফুরাত , পৃ- ১৩১ / ফাজায়ালুল খামছা , ১ম খন্ড , পৃ- ২৮ ।
সুপ্রিয় পাঠক ,
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে আহলে বায়েত (আঃ) গনকে সম্মান ও ভালবাসতে আদেশ দিয়েছেন ।
আহলে বায়েত (আঃ) এর শানে দরুদ পাঠান প্রত্যেক নামাজে আল্লাহ বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন ।
গাদীর এ খুমে নবীজী (সাঃ) ওনার ওফাত পরবর্তীতে মাওলা আলী (আঃ) কে ইমাম বা খলীফা হিসাবে আনুগত্য করার আদেশ দিয়েছেন ।
তো আমি বা আপনি আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ) এই আদেশ আমাদের ইহজীবনে মেনেছি কিনা , মহান আল্লাহ কি সে বিষয় জিজ্ঞাদাবাদ না করেই ছেড়ে দেবেন ?
অতএব আমরা কি একটি বারও কি ভেবে দেখব না যে , রাসুল (সাঃ) এর ওফাতের পরে হযরত আলী (আঃ) ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির ইমামত বা খেলাফত মানাটা কতটুকু জায়েজ বা বৈধ হবে !
হে আদমের সন্তান ,
কোরআনের এই সুষ্পষ্ট আয়াত অনুযায়ী , আমি এবং আপনি অবশ্যই পরকালে ইমাম আলী (আঃ) এর ইমামতের ব্যাপারে মহান আল্লাহ কতৃক জিজ্ঞসিত হইব ।
অতএব , সময় থাকিতে সাধু সাবধান !
SKL