হজরত আলী আকবর (আ.) ছিলেন ইমাম হুসাইন (আ.) এর সন্তান। তার মাতার নাম লাইলা বিনতেআবি মাররা বিন উরওয়া বিন মাসউদ সাক্বাফি। তিনি ৩৩ হিজরীতে মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁকে ইমাম হুসাইন খুব ভালবাসতেন। নিন্মে তাঁর কিছু গুণাবলির কথা উল্লেখ করা হলঃ

একঃ তিনি ছিলেন হজরত মোহাম্মাদ (সা.) এর সদৃশ। সকলেই তাঁর চরিত্র, আচরণ

এবং পরিপূর্ণতার প্রশংসা করতো। যেহেতু ‍তিনি ছিলেন রাসুল (সা.) এর সদৃশ, সেহেতু ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেনঃ হে খোদা! তুমি সাক্ষ্য থাক যে, আমার এ সন্তান যে তোমার রাসুল (সা.) এর সদৃশ সে আজ যুদ্ধের জন্য যাচ্ছে। আমি যখনই রাসুল (সা.) কে দেখতে চাইতাম তখন আমি আলী আকবরকে দেখতাম।

দুইঃ রাসুল (সা.) এর উম্মতের মধ্যে কেউ ১২জন ইমামের ন্যায় পবিত্র বা মাসুম হতে পারবে না। কিন্তু হজরত আলী আকবর সম্পর্কে যিয়ারতে (طیّب) এবং (زكیّ)বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনঃ হজরত আলী আকবর (আ.) মহিমা এবং বিভিন্ন গুণাবলিতে ছিলেন পরিপূর্ণ। শেইখ মুফিদ এবং সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.) এর একটি বাক্য দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন হজরত আলী আকবর (আ.) আধ্যাত্মিকতার কত উর্দ্ধে ছিলেন কারবালাতে ৯ই মহরম হজরত আলী আকবর (আ.) ইমাম হুাইন (আ.) কে জিজ্ঞাসা করেন হে বাবা! আমরা কি হক্ব পথে নাই। উত্তরে ইমাম (আ.) বলেনঃ হ্যাঁ তখন তিনি বলেনঃ তাহলে আমি আর মৃত্যুকে ভয় করি না।

চারঃ হজরত আলী আকবর (আ.) এর সাহসীকতা তাঁর দাদা হজরত আলী (আ.) এর কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। আল্লামা মাজলিসি বলেনঃ কারবালাতে তিনি যেদিকেই হামলা করছিলেন শত্রুদের জন্য আজরাইল রূপে যাচ্ছিলেন এবং এজিদি সৈন্যদের মাঝে ভয় পরিলক্ষিত হয়। ইতিহাসে বলা হয়েছে যে, যদিও তিনি তৃষ্ঞার্ত ছিলেন কিন্তু তারপরেও তিনি প্রথম হামলায় ১২০ জনকে হত্যা করেন এবং যখন পুণরায় তার বাবার কাছে বিদায় নিয়ে আসেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি প্রায় ২০০ জন এজিদি সৈন্যকে হত্যা করেছিলেন।

পাঁচঃ হজরত আলী আকবর (আ.) তাঁর চাচা ইমাম হাসান এবং তাঁর বাবা ইমাম হুসাইন (আ.) এর আদর্শে লালিত পালিত হন। ইমাম সাদিক্ব (আ.) থেকে বর্ণিত এক যিয়ারতে বলা হয়েছে যে, যখন ইমাম হুসাইন (আ.) এর কবরের পায়ের অংশে অবস্থান করবে তখন হজরত আলী আকবর (আ.) এর যিয়ারত পাঠ করবে। সে যিয়ারতে বলা হয়েছেঃ সালাম হোক আপনার প্রতি হে আমিরুর মুমিনিন (আ.) এর সন্তান, হোক আপনার প্রতি হে হাসান ও হুসাইন (আ.) এর সন্তান।

শেইখ সাদুক্ব (রহ.) উক্ত যিয়ারতটি বর্ণনা করে বলেছেনঃ হজরত আলী আকবর (আ.) কে ইমাম হাসান (আ.) এর সন্তান বলা হয়েছে কেননা তিনি ছিলেন হজরত আলী আকবর (আ.) এর শিক্ষক। কেননা হাদীস শরীফে বলা হয়েছে তোমাদের বাবা তিনজনঃ তোমার পিতা, তোমার শিক্ষক এবং তোমার স্ত্রীর বাবা। 
ইমাম আলী (আ.) হজরত আলী আকবর (আ.) কে অত্যান্ত ভালবাসতেন এমনকি তাঁর অনেক প্রশংসা করেছেন এবং তাঁর ফযিলতে কবিতাও বর্ণনা করেছেন। মাবিয়াও তাঁকে উত্তম চরিত্রের, সাহসী এবং দানী ব্যাক্তিত্ব বলে মনে করতো।

সূত্রঃ 
১- লাহুফ, পৃষ্ঠা ১১৩।
২- মাসীরুল আহযান, পৃষ্ঠা ৬৮৫। 
৩- বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৪৫, পৃষ্ঠা ৪৪৬।
৪- মাফাতিহুল জেনান, যিয়ারতের অধ্যায়।
৫- মুনতাহিউল আমাল, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৭৫।

এস, এ, এ
http://old.tvshia.com/bangla/index.php/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%97%E0%A6%A3/2372-%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80-%E0%A6%86%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A6%B0-%E0%A6%86-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%93-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%A3%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A6%BF