” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” —
এই কথাটি বিশেষ করে গাদীর এ খুম পরিত্যাগকারী মুসলমান ভাইগন অভিযোগের সুরে বলে থাকেন যে , বার ইমামীয়া শীয়ারা তাদের কলেমায় বলে থাকেন যে —
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” ।
শীয়াদের এই কলেমাটি মারাত্মক ভুল বা অন্যায় । এজন্য ওনারা বার ইমামীয়া শীয়াদের ফটাফট কাফের , বাতিল ইত্যাদি ফতোয়া দিয়ে থাকেন ।
পাঠক ,
আসুন এ বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কিছুটা আলোচনা করা যাক ।
যিনি বা যারা এই অভিযোগটি করে থাকেন তাদের প্রতি বিনীত ভাবে নিবেদন এই যে –
সমগ্র দুনিয়ার সকল ফেরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মূল কলেমা , মূল কথা , মূল বুনিয়াদ বা মূলনীতি কথা এটাই যে –
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ ” ।
এই কলেমা তৈয়বাটি এইভাবে একসাথে পবিত্র কোরআনে কোথাও লেখা নেই ।
তবে এই দুটি কথা পবিত্র কোরআনে বহু আয়াতে খুব সুস্পষ্ট ভাবে বলা আছে ।
অর্থাৎ ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ” – আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই ।
” মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ ” – মুহাম্মাাদ আল্লাহ কতৃক প্রেরিত একজন রাসুল ।
পবিত্র কোরআনে বিদ্যমান এই দুটি কলেমা বা কথা বা আয়াতকে একসাথে জুড়ে দিয়ে বলা হয় যে –
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ ” ।
এই কলেমা বা আয়াতটি শতভাগ সত্য কথা ।
এটা নিয়ে দুনিয়ার কোন মুসলমানের বিন্দুমাত্র দ্বিমত নাই । কারন কোরআন কতৃক স্বীকৃত এই মূলনীতিই হচ্ছে একজন মুসলমানের সর্বপ্রথম ভিত্তি বা বুনিয়াদ ।
এবারে আসুন বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমাটি বলে থাকে অর্থাৎ –
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” ।
এই কলেমাটি কি আদৌ পবিত্র কোরআন কতৃক স্বীকৃত ?
এই কলেমাটি কি আদৌ রাসুল (সাঃ) কতৃক সহীহ হাদিস দ্বারা স্বীকৃত ?
যদি পবিত্র কোরআন এবং সহীহ হাদিস দ্বারা অনুমোদিত ও স্বীকৃত না হয় তাহলে বার ইমামীয়া শীয়াদের বিরুদ্বে আনীত সকল অভিযোগ ১০০ ভাগ সত্য ।
আসুন দেখে নেয়া যাক —
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” – এই কলেমাটি পবিত্র কোরআন কতৃক অনুমোদিত ও স্বীকৃত কিনা ?
প্রথমে জেনে নেই যে , এই কলেমাটির বাংলা অর্থ কি ?
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাল্লাহ আলী উন অলী উল্লাহ ।
বাংলা অর্থ –
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু – আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নাই ,
মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাল্লাহ – মুহাম্মাাদ আল্লাহ কতক প্রেরিত একজন রাসুল ,
আলী উন অলী উল্লাহ – আলী আল্লাহ কতৃক প্রেরিত একজন অলী ।
এবারে দেখে নিন এই কলেমাটির সমর্থিত পবিত্র কোরআনের আয়াত —
“ — তোমাদের অভিভাবক শুধু আল্লাহ , তাঁর রাসুল এবং সেই বিশ্বাসী যে নামাজ বজায় রাখে এবং যাকাত আদায় করে রুকুরত অবস্থায় — “ ।
সুরা – মাইদা / ৫৫ ।
এই আয়াতে মহান আল্লাহ নিজেকে সকলের জন্য অভিভাবক , অলী বা মাওলা হিসাবে ঘোষনা করেছেন ।
দ্বিতীয়ত – তাঁর রাসুল (সাঃ) কে সকলের জন্য অভিভাবক , অলী বা মাওলা হিসাবে ঘোষনা করেছেন ।
সর্বশেষ ও তৃতীয়ত – ঐ বিশ্বাসী ব্যক্তিটি যিনি রুকুরত অবস্থায় যাকাত আদায় করেছেন ।
তাহলে বিষয়টি খুবই সুস্পষ্ট যে , সমগ্র মানবজাতির জন্য শুধুমাত্র তিনজন হলেন অলী , অভিভাবক বা মাওলা । ঐ তিনজন হলেন –
১) – আল্লাহ ,
২) – রাসুল (সাঃ) ,
৩) – আলী (আঃ) ।
কেননা ইতিহাস এবং সহীহ হাদিস দিয়ে এটা প্রমানিত যে , রুকুরত অবস্থায় যাকাত আদায়কারী তৃতীয় ব্যক্তিটি হলেন হযরত আলী (আঃ) ।
সুরা মাইদার ৫৫ নং আয়াতের এই ঘটনা জানতে হলে পড়ুন –
সূত্র – তাফসিরে নুরুল কোরআন , খঃ-৬, পৃঃ-২৮৫ (আমিনুল ইসলাম) / কুরআনুল করিম , পৃঃ-৩০০ মহিউদ্দীন খান / আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ-৭৩,৭৪ ( উর্দু) ,/ কানজুল উম্মাল , খঃ-৭, পৃঃ-৩০৫ / তাফসিরে কাশফুল বায়ান , খঃ-১, পৃঃ-৭৪ / তাফসিরে কানজুল ইমান, পৃঃ-২২৩ ( আহমদ রেজা খা) / তাফসিরে মারেফুল কোরআন , খঃ-৩, পৃঃ-১৫৯ ( মুফতি মোঃ শফি ) / তাফসিরে ইবনে কাসির, খঃ-৩, পৃঃ-৪৮৪ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / তাফসিরে তাবারী, খঃ-৬, পৃঃ-২৮৮ / তাফসিরে কাশশাফ, খঃ-১, পৃঃ-৬৮৩ / তাফসিরে ইবনে জাওযীয়াদ আল মুসির, খঃ-২, পৃঃ-৩৮৩ / তাফসিরে কুরতুবি, খঃ-৬, পৃঃ-২৮৮ / তাফসিরে ফাখরে রাজী, খঃ-১২, পৃঃ-২৫ / তাফসিরে ইবনে কাসির, খঃ-২, পৃঃ-৭১ / তাফসিরে দুররে মানসুর, খঃ-২, পৃঃ-২৯৩ / তাফসিরে আহকামুল কোরআন, পৃঃ-২৯৩ / আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, খঃ-৭, পৃঃ-৩৫৭ / নুরুল আবসার, পৃঃ-৭৭ / ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-২১২ ।
পাঠক ,
এবারে দেখে নিন – হযরত আলী (আঃ) কে অলী , অভিভাবক বা মাওলা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন স্বয়ং রাসুল (সাঃ) নিজে ।
বিদায় হজ্ব থেকে ফেরার পথে গাদীর এ খুম নামক স্থানে পবিত্র কোরআনের এই সুরাটি নাজিলের প্রেক্ষাপটে লক্ষাধিক হজ্ব ফেরৎ হাজী সাহাবাগনের সম্মুখে হযরত মুহাম্মাাদ (সাঃ) স্বয়ং নিজে হযরত আলী (আঃ) কে অলী , অভিভাবক বা মাওলা হিসাবে ঘোষনা দিলেন ।
“ – হে রাসুল , পৌঁছে দাও যা তোমার কাছে অবতীর্ন হয়েছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে এবং যদি তুমি তা না কর , তুমি তাঁর রেসালতই পৌঁছে দাও নি এবং আল্লাহ তোমাকে জনতার হাত থেকে রক্ষা করবেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফের দলকে পথ দেখান না —- “ ।
সুরা – মাইদা / ৬৭ ।
সুরা মাইদার ৬৭ নং আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপটে রাসুল (সাঃ) নিজে এই ঘোষনা দিলেন যে —
যেটা হাদিসে গাদীর নামে বহুল প্রচলিত —-
গাদীর দিবসে রাসুল (সাঃ) স্বয়ং নিজেই হযরত আলী (আঃ) সম্পর্কে যে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন যে ,
“من کنت مولاه فهذا علی مولاه”
বাংলা অনুবাদ – ” আমি যার মাওলা এই আলীও তার মাওলা বা অভিভাবক ”।
গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিশেষ করে হযরত আবু বকর এবং হযরত ওমর এই ঘোষনার পরে হযরত আলী (আঃ) কে মোবারকবাদ দেন ।
এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে হলে দেখুন —
তথ্যসূ্ত্র – তাফসীরে দুররে মানসুর , খন্ড – ৩, পৃ- ১১৭ / তাফসীরে কাবির , খন্ড – ১২ , পৃ- ৫০ / তাফসীরে মানারিজ , খন্ড – ২, পৃ-৮৬ / তাফসীরে আলুসি , খন্ড – ২, পৃ- ৩৮৪ / আসবাবুন নুযুল, পৃ- ১৩৫ / শাওয়াহেদুত তানযিল, খন্ড – ১, পৃ- ১৯২ / তারিখে দামেস্ক , খন্ড – ২ , পৃ- ৮৬ / ফাতহুল কাদীর, খন্ড – ২ , পৃ- ৬০ / মাতালেবাস সাউল, খন্ড- ১ , পৃ- ৪৪ / আরজাহুল মাতালেব, পৃ- ১১৯ (উর্দ্দু) / আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া , খন্ড – ৩, পৃ- ২১৩ / মুসনাদে হাম্বল , খন্ড – ৪ , পৃ- ২৪ / তারিখ আল খাতিব, খন্ড – ৮ , পৃ- ২৯০ / কানজুল উম্মাাল, খন্ড – ৬, পৃ- ৩৯৭ / আর রিয়াযুন নাজরা , খন্ড – ২, পৃ- ১৬৯ / মিসকাত আল মাসাবিহ, পৃ- ৫৫৭ / মুসতাদরাক হাকেম, খন্ড – ৩, পৃ- ১০৯ / সিবরুল আলামীন, পৃ- ৯ (ইমাম গাজ্জালী ) / আরজাহুল মাতালেব , পৃ- ৯০৭ – ৯৬৪ / ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত , পৃ- ১২০ / দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা (বাংলাদেশ) , ৪ঠা মার্চ ২০০২ , ২৩শে জানুয়ারী ২০০৬ , ২৮শে জানুয়ারী ২০০৫ / আশারা মোবাশশারা , পৃ- ১৬৩ (এমদাদীয়া লাইব্রেরী) / মাসিক মদীনা , পৃ- ১৫ , জুন ২০০৫(বাংলাদেশ) / ঐতিহাসিক আল গাদীর , পৃ- ৫ – ১২৮, মীর রেজা হোসাইন শহীদ / ইসলামী বিশ্বকোষ , খন্ড – ১০ , পৃ- ৩০৭ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / সহীহ আল বুখারী , খন্ড – ৫ , পৃ- ২৮০ (হামিদীয়া লাইব্রেরী) / সীরাতুন নবী , খন্ড- ২ , পৃ- ৬০৫ (তাজ কোং) / তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ৩ , পৃ- ৭৩৩ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / সুনানে ইবনে মাজা , খন্ড – ১ , পৃ- ৪৩ , হাদিস নং – ১১৬ / তারিখে ইবনে কাসির , খন্ড – ৪ , পৃ- ২৮১ ।
পাঠক ,
এবারে আপনিই বলুন যে ,
বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমা বা কথাটি বলে থাকে সেটা কি ভুল !
বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমা বা কথাটি বলে থাকে সেটা কি পবিত্র কোরআন কতৃক সমর্থিত নয় !
বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমা বা কথাটি বলে থাকে সেটা কি রাসুল (সাঃ) এর সহীহ হাদিস কতৃক সমর্থিত নয় !
আপনি যথেষ্ট শিক্ষিত সচেতন একজন মানুষ ।
আশা করি ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” এই কলেমা বা কথাটির সার্বিক অর্থ ও গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হয়েছেন ।
এতক্ষন মন দিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ও সালাম রইল ।
SKL
এই কথাটি বিশেষ করে গাদীর এ খুম পরিত্যাগকারী মুসলমান ভাইগন অভিযোগের সুরে বলে থাকেন যে , বার ইমামীয়া শীয়ারা তাদের কলেমায় বলে থাকেন যে —
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” ।
শীয়াদের এই কলেমাটি মারাত্মক ভুল বা অন্যায় । এজন্য ওনারা বার ইমামীয়া শীয়াদের ফটাফট কাফের , বাতিল ইত্যাদি ফতোয়া দিয়ে থাকেন ।
পাঠক ,
আসুন এ বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কিছুটা আলোচনা করা যাক ।
যিনি বা যারা এই অভিযোগটি করে থাকেন তাদের প্রতি বিনীত ভাবে নিবেদন এই যে –
সমগ্র দুনিয়ার সকল ফেরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মূল কলেমা , মূল কথা , মূল বুনিয়াদ বা মূলনীতি কথা এটাই যে –
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ ” ।
এই কলেমা তৈয়বাটি এইভাবে একসাথে পবিত্র কোরআনে কোথাও লেখা নেই ।
তবে এই দুটি কথা পবিত্র কোরআনে বহু আয়াতে খুব সুস্পষ্ট ভাবে বলা আছে ।
অর্থাৎ ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ” – আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই ।
” মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ ” – মুহাম্মাাদ আল্লাহ কতৃক প্রেরিত একজন রাসুল ।
পবিত্র কোরআনে বিদ্যমান এই দুটি কলেমা বা কথা বা আয়াতকে একসাথে জুড়ে দিয়ে বলা হয় যে –
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ ” ।
এই কলেমা বা আয়াতটি শতভাগ সত্য কথা ।
এটা নিয়ে দুনিয়ার কোন মুসলমানের বিন্দুমাত্র দ্বিমত নাই । কারন কোরআন কতৃক স্বীকৃত এই মূলনীতিই হচ্ছে একজন মুসলমানের সর্বপ্রথম ভিত্তি বা বুনিয়াদ ।
এবারে আসুন বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমাটি বলে থাকে অর্থাৎ –
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” ।
এই কলেমাটি কি আদৌ পবিত্র কোরআন কতৃক স্বীকৃত ?
এই কলেমাটি কি আদৌ রাসুল (সাঃ) কতৃক সহীহ হাদিস দ্বারা স্বীকৃত ?
যদি পবিত্র কোরআন এবং সহীহ হাদিস দ্বারা অনুমোদিত ও স্বীকৃত না হয় তাহলে বার ইমামীয়া শীয়াদের বিরুদ্বে আনীত সকল অভিযোগ ১০০ ভাগ সত্য ।
আসুন দেখে নেয়া যাক —
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” – এই কলেমাটি পবিত্র কোরআন কতৃক অনুমোদিত ও স্বীকৃত কিনা ?
প্রথমে জেনে নেই যে , এই কলেমাটির বাংলা অর্থ কি ?
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাল্লাহ আলী উন অলী উল্লাহ ।
বাংলা অর্থ –
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু – আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নাই ,
মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাল্লাহ – মুহাম্মাাদ আল্লাহ কতক প্রেরিত একজন রাসুল ,
আলী উন অলী উল্লাহ – আলী আল্লাহ কতৃক প্রেরিত একজন অলী ।
এবারে দেখে নিন এই কলেমাটির সমর্থিত পবিত্র কোরআনের আয়াত —
“ — তোমাদের অভিভাবক শুধু আল্লাহ , তাঁর রাসুল এবং সেই বিশ্বাসী যে নামাজ বজায় রাখে এবং যাকাত আদায় করে রুকুরত অবস্থায় — “ ।
সুরা – মাইদা / ৫৫ ।
এই আয়াতে মহান আল্লাহ নিজেকে সকলের জন্য অভিভাবক , অলী বা মাওলা হিসাবে ঘোষনা করেছেন ।
দ্বিতীয়ত – তাঁর রাসুল (সাঃ) কে সকলের জন্য অভিভাবক , অলী বা মাওলা হিসাবে ঘোষনা করেছেন ।
সর্বশেষ ও তৃতীয়ত – ঐ বিশ্বাসী ব্যক্তিটি যিনি রুকুরত অবস্থায় যাকাত আদায় করেছেন ।
তাহলে বিষয়টি খুবই সুস্পষ্ট যে , সমগ্র মানবজাতির জন্য শুধুমাত্র তিনজন হলেন অলী , অভিভাবক বা মাওলা । ঐ তিনজন হলেন –
১) – আল্লাহ ,
২) – রাসুল (সাঃ) ,
৩) – আলী (আঃ) ।
কেননা ইতিহাস এবং সহীহ হাদিস দিয়ে এটা প্রমানিত যে , রুকুরত অবস্থায় যাকাত আদায়কারী তৃতীয় ব্যক্তিটি হলেন হযরত আলী (আঃ) ।
সুরা মাইদার ৫৫ নং আয়াতের এই ঘটনা জানতে হলে পড়ুন –
সূত্র – তাফসিরে নুরুল কোরআন , খঃ-৬, পৃঃ-২৮৫ (আমিনুল ইসলাম) / কুরআনুল করিম , পৃঃ-৩০০ মহিউদ্দীন খান / আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ-৭৩,৭৪ ( উর্দু) ,/ কানজুল উম্মাল , খঃ-৭, পৃঃ-৩০৫ / তাফসিরে কাশফুল বায়ান , খঃ-১, পৃঃ-৭৪ / তাফসিরে কানজুল ইমান, পৃঃ-২২৩ ( আহমদ রেজা খা) / তাফসিরে মারেফুল কোরআন , খঃ-৩, পৃঃ-১৫৯ ( মুফতি মোঃ শফি ) / তাফসিরে ইবনে কাসির, খঃ-৩, পৃঃ-৪৮৪ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / তাফসিরে তাবারী, খঃ-৬, পৃঃ-২৮৮ / তাফসিরে কাশশাফ, খঃ-১, পৃঃ-৬৮৩ / তাফসিরে ইবনে জাওযীয়াদ আল মুসির, খঃ-২, পৃঃ-৩৮৩ / তাফসিরে কুরতুবি, খঃ-৬, পৃঃ-২৮৮ / তাফসিরে ফাখরে রাজী, খঃ-১২, পৃঃ-২৫ / তাফসিরে ইবনে কাসির, খঃ-২, পৃঃ-৭১ / তাফসিরে দুররে মানসুর, খঃ-২, পৃঃ-২৯৩ / তাফসিরে আহকামুল কোরআন, পৃঃ-২৯৩ / আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, খঃ-৭, পৃঃ-৩৫৭ / নুরুল আবসার, পৃঃ-৭৭ / ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-২১২ ।
পাঠক ,
এবারে দেখে নিন – হযরত আলী (আঃ) কে অলী , অভিভাবক বা মাওলা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন স্বয়ং রাসুল (সাঃ) নিজে ।
বিদায় হজ্ব থেকে ফেরার পথে গাদীর এ খুম নামক স্থানে পবিত্র কোরআনের এই সুরাটি নাজিলের প্রেক্ষাপটে লক্ষাধিক হজ্ব ফেরৎ হাজী সাহাবাগনের সম্মুখে হযরত মুহাম্মাাদ (সাঃ) স্বয়ং নিজে হযরত আলী (আঃ) কে অলী , অভিভাবক বা মাওলা হিসাবে ঘোষনা দিলেন ।
“ – হে রাসুল , পৌঁছে দাও যা তোমার কাছে অবতীর্ন হয়েছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে এবং যদি তুমি তা না কর , তুমি তাঁর রেসালতই পৌঁছে দাও নি এবং আল্লাহ তোমাকে জনতার হাত থেকে রক্ষা করবেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফের দলকে পথ দেখান না —- “ ।
সুরা – মাইদা / ৬৭ ।
সুরা মাইদার ৬৭ নং আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপটে রাসুল (সাঃ) নিজে এই ঘোষনা দিলেন যে —
যেটা হাদিসে গাদীর নামে বহুল প্রচলিত —-
গাদীর দিবসে রাসুল (সাঃ) স্বয়ং নিজেই হযরত আলী (আঃ) সম্পর্কে যে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন যে ,
“من کنت مولاه فهذا علی مولاه”
বাংলা অনুবাদ – ” আমি যার মাওলা এই আলীও তার মাওলা বা অভিভাবক ”।
গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিশেষ করে হযরত আবু বকর এবং হযরত ওমর এই ঘোষনার পরে হযরত আলী (আঃ) কে মোবারকবাদ দেন ।
এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে হলে দেখুন —
তথ্যসূ্ত্র – তাফসীরে দুররে মানসুর , খন্ড – ৩, পৃ- ১১৭ / তাফসীরে কাবির , খন্ড – ১২ , পৃ- ৫০ / তাফসীরে মানারিজ , খন্ড – ২, পৃ-৮৬ / তাফসীরে আলুসি , খন্ড – ২, পৃ- ৩৮৪ / আসবাবুন নুযুল, পৃ- ১৩৫ / শাওয়াহেদুত তানযিল, খন্ড – ১, পৃ- ১৯২ / তারিখে দামেস্ক , খন্ড – ২ , পৃ- ৮৬ / ফাতহুল কাদীর, খন্ড – ২ , পৃ- ৬০ / মাতালেবাস সাউল, খন্ড- ১ , পৃ- ৪৪ / আরজাহুল মাতালেব, পৃ- ১১৯ (উর্দ্দু) / আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া , খন্ড – ৩, পৃ- ২১৩ / মুসনাদে হাম্বল , খন্ড – ৪ , পৃ- ২৪ / তারিখ আল খাতিব, খন্ড – ৮ , পৃ- ২৯০ / কানজুল উম্মাাল, খন্ড – ৬, পৃ- ৩৯৭ / আর রিয়াযুন নাজরা , খন্ড – ২, পৃ- ১৬৯ / মিসকাত আল মাসাবিহ, পৃ- ৫৫৭ / মুসতাদরাক হাকেম, খন্ড – ৩, পৃ- ১০৯ / সিবরুল আলামীন, পৃ- ৯ (ইমাম গাজ্জালী ) / আরজাহুল মাতালেব , পৃ- ৯০৭ – ৯৬৪ / ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত , পৃ- ১২০ / দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা (বাংলাদেশ) , ৪ঠা মার্চ ২০০২ , ২৩শে জানুয়ারী ২০০৬ , ২৮শে জানুয়ারী ২০০৫ / আশারা মোবাশশারা , পৃ- ১৬৩ (এমদাদীয়া লাইব্রেরী) / মাসিক মদীনা , পৃ- ১৫ , জুন ২০০৫(বাংলাদেশ) / ঐতিহাসিক আল গাদীর , পৃ- ৫ – ১২৮, মীর রেজা হোসাইন শহীদ / ইসলামী বিশ্বকোষ , খন্ড – ১০ , পৃ- ৩০৭ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / সহীহ আল বুখারী , খন্ড – ৫ , পৃ- ২৮০ (হামিদীয়া লাইব্রেরী) / সীরাতুন নবী , খন্ড- ২ , পৃ- ৬০৫ (তাজ কোং) / তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ৩ , পৃ- ৭৩৩ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / সুনানে ইবনে মাজা , খন্ড – ১ , পৃ- ৪৩ , হাদিস নং – ১১৬ / তারিখে ইবনে কাসির , খন্ড – ৪ , পৃ- ২৮১ ।
পাঠক ,
এবারে আপনিই বলুন যে ,
বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমা বা কথাটি বলে থাকে সেটা কি ভুল !
বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমা বা কথাটি বলে থাকে সেটা কি পবিত্র কোরআন কতৃক সমর্থিত নয় !
বার ইমামীয়া শীয়ারা যে কলেমা বা কথাটি বলে থাকে সেটা কি রাসুল (সাঃ) এর সহীহ হাদিস কতৃক সমর্থিত নয় !
আপনি যথেষ্ট শিক্ষিত সচেতন একজন মানুষ ।
আশা করি ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাাদুর রাসুল্লাহ আলী উন অলী আল্লাহ ” এই কলেমা বা কথাটির সার্বিক অর্থ ও গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হয়েছেন ।
এতক্ষন মন দিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ও সালাম রইল ।
SKL