বেশ কিছু সংখ্যক জাহান্নামী সাহাবাগন —-
” — সেদিন কিছু চেহারা শুভ্র হবে এবং কিছু চেহারা কাল হয়ে যাবে । আর যাদের চেহারা কাল হয়ে যাবে [তাদের বলা হবে] ” ঈমান আনার পর তোমরা কি সত্য প্রত্যাখান করেছিলে ?” সুতরাং তোমরা শাস্তি ভোগ কর যেহেতু তোমরা কুফরী করতে — ” ।
সুরা – আলে ইমরান / ১০৬ ।

প্রিয় পাঠক ,
খেয়াল করুন – ” ঈমান আনার পর তোমরা কি সত্য প্রত্যাখান করেছিলে ?” সুতরাং তোমরা শাস্তি ভোগ কর যেহেতু তোমরা কুফরী করতে — ” ।
পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে পরিস্কার করে বলা হচ্ছে যে , ঐ সকল ব্যক্তিবর্গ প্রথমে মুসলমান হয়েছিল এবং পরে তারা পুনরায় তাদের অতীত জীবন অর্থাৎ কুফরীর জীবনে চলে যায় ।
এবারে পবিত্র কোরআনের এই আয়াতের সমর্থিত রাসুল (সাঃ) এর দুটি হাদিসের প্রতি মনযোগ চাচ্ছি , প্লীজ —
রাসুল (সাঃ) বলেন যে , আমি দন্ডায়মান অবস্থায় ছিলাম । দেখলাম আমার সামনে একদল লোক যাদের সবাইকে আমি চিনলাম ।
তখন মধ্যখানে একজন লোক এসে বলল , ” চল আমরা যাই ” ।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম , ” এদের কোথায় যেতে হবে ?”
সে বলল , ” আল্লাহর কসম , জাহান্নামে ” ।
আমি জিজ্ঞেস করলাম , ” এদের অপরাধ কি ? ”
সে বলল , ” আপনার ইন্তেকালের পর এরা সবাই মুরতাদ হয়ে গিয়েছিল এবং আমি আশা করি অতি অল্প সংখ্যক মুক্তি পাবে ” ।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রা) থেকে বর্ণিত –
মহানবী (সাঃ) বলেন , আমি সবার পূর্বে হাউজে কাউসারে তোমাদের সম্মুখে থাকব । যে আমার নিকট দিয়ে যাবে সে হাউজে কাউসার থেকে তৃপ্তি সহকারে পানি পান করে যাবে । যে একবার পানি পান করবে তার কখনই পিপাসা লাগবে না ।
হাউজের নিকটে কিছু লোক আসবে । আমি তাদেরকে চিনি , তারাও আমাকে ভালভাবে চেনে । অতঃপর আমার ও তাদের মাঝে একটি দেওয়াল সৃষ্টি করে দেওয়া হবে ।
আমি বলব , ” এরা তো সকলেই আমার সাহাবী ” !
জবাবে তখন বলা হবে , ” আপনি জানেন না , আপনার ইন্তেকালের পর তারা কি কি বেদআত করেছে ” ।
তখন আমি তাদের বলব , ” আফসোস ! তাদের উপর , যারা আমার ইন্তেকালের পরে দ্বীনের ভিতর পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করেছে ” ।
সূত্র – বুখারী শরীফ , (আধুনিক প্রকাশনী) ষষ্ঠ খন্ড , হাদিস নাঃ – ৬১১৯ / সহীহ আল বুখারী , চতুর্থ খন্ড , পৃ- ৯৪ , ২য় খন্ড , পৃ- ৩২ / সহীহ মুসলিম শরীফ , ৭ম খন্ড , পৃ- ৬৬ (হাদিস আল হাউজ) / অবশেষে আমি সত্য পেলাম , পৃ- ১০৩ (নিউ দিল্লী , ভারত) ।
পাঠক ,
উপরে উল্লেখিত হাদিসগুলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সহীহ সিত্তাহ হাদিসগ্রন্থে বিদ্যমান আছে ।
অতএব , সন্দেহের কোন অবকাশ নাই যে , রাসুল (সাঃ) এর ইন্তেকালের পর অধিকাংশ সাহাবাগন নবীজী (সাঃ) এর রেখে যাওয়া দ্বীনের মধ্যে প্রচুর পরিবর্তন করেছিলেন । মুষ্টিমেয় কিছু সংখ্যক সাহাবী ব্যতীত অধিকাংশ সাহাবা মুরতাদ হয়ে গিয়েছিল মহানবী (সাঃ) এর ইন্তেকালের পরে ।
উপরোক্ত হাদিস অবশ্যই মুনাফেকগনের জন্য প্রযোজ্য হবে না । কেননা হদিসে এসেছে , মহানবী (সাঃ) বলবেন , ” এরা তো সকলেই আমার সাহাবী ” ।
পবিত্র কোরআন এবং সহীহ সিত্তাহর হাদিস মোতাবেক অপ্রিয় বাস্তব সত্য এটাই যে , রাসুল (সাঃ) এর ইন্তেকালের পর অধিকাংশ সাহাবী তাদের পূর্বের জীবন অর্থাৎ কুফরী জীবনে পদার্পন করেছিলেন ।
নিরপেক্ষ মন নিয়ে ঠান্ডা মাথায় বিষয়টি ভাবুন , প্লীজ ।
SKL