এ সময়’ মূল বিষয়ে সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি সঠিক রেখে তুমি সুবিধা অর্জন করতে পারতে। কারণ তোমার পূর্বপুরুষদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তুমিও মিথ্যা দাবি করছে এবং মিথ্যা ও অসত্য ছড়াচ্ছে। তুমি এমন কিছু দাবি করছে যা তোমার চেয়ে অনেক উর্ধের্ব এবং যা তোমার জন্য নয়। কারণ তুমি ন্যায় থেকে পালিয়ে যেতে চাও। তুমি এমন কিছুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে যা তোমার কর্ণকুহরে। ভালোভাবে প্রবশে করেছে এবং তোমার বক্ষ পূর্ণ করেছে। ন্যায় ও সত্য বিস্মৃত হবার পর বিপথগামিতা ছাড়া আর কিছুই থাকে না এবং সুস্পষ্ট ঘোষণার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করলে বিভ্রান্তি ছাড়া আর কিছু থাকে না। সংশয় ও বিভ্রান্তির কুফল থেকে তোমার নিজকে রক্ষা করা উচিত, কারণ দীর্ঘদিন থেকে ফেতনা-ফ্যাসাদ তোমার চোখকে অন্ধ করে রেখেছে।
আমি তোমার পত্র পেয়েছি। তোমার পত্র অমার্জিত ভাষায় পরিপূর্ণ যা শান্তির পথকে দুর্বল করে দেয় এবং তোমার নিবুদ্ধিতাপূর্ণ উক্তি ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে দেয়। এসব কারণে মনে হয় যেন তুমি পচা ডোবায় ডুব দিচ্ছে। আর অন্ধের মতো হাতড়ে বেড়াচ্ছে। তুমি নিজেকে এত উচুতে তুলে ধরেছে। মনে হয় যেন তোমার কাছে পৌছা দুঃসাধ্য এবং তুমি তুলনাহীন। রাজকীয় ঘুড়িও এত উচুতে উড়তে পারে না; এটা যেন উচ্চতায় ‘আয়ুক’ (তারকার নাম)-এর সমান।
আল্লাহ মাফ করেছেন যে, আমি খলিফা হবার পর তোমাকে মানুষের ওপর কোন কর্তৃত্ব অর্পণ করি নি বা এমন কোন নির্দেশ জারি করি নি। সুতরাং এখন থেকে নিজের প্রতি সতর্ক হও এবং নিজকে ঠিক কর। কারণ যদি তুমি অবাধ্য হও তবে আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ তোমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে তওবা করার সুযোগ পাবে না। যা আজ গ্রহণ করা হবে তখন তা করা হবে না। এখানেই শেষ করছি।
১। খারিজিদের সাথে যুদ্ধের শেষ দিকে মুয়াবিয়া আমিরুল মোমেনিনকে একখানা পত্র লেখেছিল যাতে সে তার চিরাচরিত স্বভাব অনুযায়ী কাদা ছোড়াছুড়ি করেছে। প্রত্যুত্তরে আমিরুল মোমেনিন এ পত্র লেখেছিলেন যাতে তিনি খারিজদের সাথে যুদ্ধের স্পষ্ট ঘটনার প্রতি মুয়াবিয়ার দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন। কারণ এ যুদ্ধ রাসুলের (সঃ) ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী সংঘটিত হয়েছে। এমন কি আমিরুল মোমেনিনও এ যুদ্ধের অনেক আগেই বলেছেন যে, জামাল ও সিফফিন ব্যতীত আরো একটা ধর্মত্যাগী দলের সঙ্গে তার যুদ্ধ করতে হবে। এ যুদ্ধে জুছছুদাইয়ার হত্যার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো যে, আমিরুল মোমেনিন সঠিক পথে ছিলেন। মুয়াবিয়া যদি তার পূর্বপুরুষদের মতো ন্যায় ও পূণ্যের প্রতি চোখ বন্ধ করে না রাখতো এবং আত্মপ্রশংসা ও ক্ষমতার লোভে বিভোর না হতো তাহলে সে ন্যায়ের পথে চলতে পারতো। কিন্তু বংশগত স্বভাবের প্রভাবে সে নিজে শোনা সত্ত্বেও রাসুলের (সঃ) এ সব বাণীর প্রতি কোন মর্যাদা প্ৰদান করে নি, যেমন- “আমি যার মাওলা, আলী তার মাওলা” এবং “হে আলী, মুসার কাছে হারুন যেমন আমার কাছে তুমি তেমন।”