কুফার একটি সৈন্যদল খারিজিদের সঙ্গে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করলে আমিরুল মোমেনিন তাদের সংবাদ আনার জন্য তার একজন লোককে পাঠিয়েছিলেন। সে ফিরে এলে আমিরুল মোমেনিন। জিজ্ঞেস করলেন, “তারা কি সন্তুষ্ট, পথে ফিরে আসবে, নাকি দুর্বলতা অনুভব করছে ও বিপথগামী হয়ে যাচ্ছে?” লোকটি প্রত্যুত্তরে বললো, “তারা চলে গেছে, হে আমিরুল মোমেনিন।” তখন তিনি বললেনঃ তাদের কাছ থেকে আল্লাহর রহমত দূরে সরে থাকুক। যেমনটি হয়েছিল ছামুদ জাতির বেলায়। জেনে রাখো, যখন তাদের প্রতি সজোরে বর্শা নিক্ষিপ্ত হবে এবং তাদের মাথায় তরবারির আঘাত পড়বে তখন সে তাদের সাথে সকল সম্পর্ক অস্বীকার করবে এবং তাদেরকে পরিত্যাগ করবে। হেদায়েত থেকে সরে
পড়া, গোমরাহি ও অন্ধত্বের দিকে ফিরে যাওয়া, সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভ্রান্তিতে নিপতিত হওয়াই তাদের শাস্তির জন্য যথেষ্ট ।
১। সিফফিনের যুদ্ধে বনি নাযিয়াহ গোত্রের খির রিট ইবনে রশিদ আন-নাযি নামক একজন লোক আমিরুল মোমেনিনের পক্ষে ছিল। কিন্তু সালিসির পর সে বিদ্রোহী হয়ে ত্ৰিশজন লোকসহ আমিরুল মোমিনের নিকট এসে বললো, “আল্লাহর কসম, আমি আর আপনার আদেশ মান্য করবো না; আপনার পিছনে সালাত আদায় করবো না এবং আগামীকাল আপনাকে পরিত্যাগ করে চলে যাবো।” তার কথা শুনে আমিরুল মোমেনিন বললেন, “প্রথমে তুমি সালিসির প্রকৃত কারণ ও এর ক্ষেত্র বিবেচনা করে দেখ এবং তারপর এ বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা কর। যদি তাতে তুমি সন্তুষ্ট না হও তবে তোমার যা ইচ্ছা করো।” সে বললো যে, সে পরদিন আলোচনা করতে আসবে। আমিরুল মোমেনিন তাকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, “দেখ, এখান থেকে যাবার পর তুমি যেন অন্যদের দ্বারা বিপথগামী হয়ে না যাও। তুমি অন্য কোন পথ গ্রহণ করো না। যদি তোমার বুঝবার ইচ্ছা থাকে। তবে আমি তোমাকে এই বিভ্ৰান্তির পথ থেকে বের করে আনবো এবং হেদায়েতের পথ তোমাকে দেখিয়ে দেব।” একথা বলার পর সে চলে গেল। যাবার কালে তার মুখের ভাব থেকে বুঝা গিয়েছিল যে, বিদ্রোহের দিকেই তার ঝোক বেশি এবং সে কোন যুক্তি গ্ৰহণ করতে নারাজ। প্রকৃতপক্ষে হয়েছিলও তা-ই। সে তার গোত্রের লোকদের কাছে ফিরে গিয়ে বললো, “আমরা যখন আলীকে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি তখন আর তার কাছে ফিরে যাবার কোন দরকার নেই। আমরা আমাদের সিদ্ধান্তানুযায়ী কাজ করবো।” এরপর আবদুল্লাহ ইবনে কুয়ান আল-আজদি বিষয়টি জানার জন্য তাদের কাছে গেল। অবস্থা জানতে পেরে তিনি মাদ্রিক ইবনে রায়ান আন-নাযিকে অনুরোধ করেছিলেন যেন তার সাথে কথা বলে এবং বিদ্রোহের ধ্বংসাত্মক পরিণতি সম্বন্ধে তাকে বুঝিয়ে বলেছিলেন। এতে মাদ্রিক তাকে নিশ্চয়তা প্ৰদান করেছিল যে, এরূপ কোন পদক্ষেপ গ্ৰহণ করতে খিররিটিকে অনুমতি দেয়া হবে। না। তারপর আবদুল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে এসে আমিরুল মোমেনিনকে ঘটনা সবিস্তারে জানালেন। আমিরুল মোমেনিন বললেন, “দেখা যাক, সে এলে অবস্থা কি দাড়ায়।” কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হবার পরও সে না। আসায় আমিরুল মোমেনিন আবদুল্লাহকে আবার পাঠালেন। আবদুল্লাহ গিয়ে দেখলেন যে তারা সেই স্থান ত্যাগ করে চলে গেছে। তিনি ফিরে এসে আমিরুল মোমেনিনকে বিষয়টি জানালে তিনি এ খোৎবা প্ৰদান করেন। খিররিটের দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা। ৪৪ নং খোৎবায় বর্ণিত হয়েছে।