মৃত্যুর পূর্বক্ষণে প্রদত্ত ভাষণ হে লোকসকল, প্রত্যেক ব্যক্তিই তার সাক্ষাত পাবে যা সে দৌড়ে পালিয়ে এড়িয়ে যেতে চায় (অর্থাৎ প্রত্যেকের মৃত্যু ঘটবে)। মৃত্যু এমন এক স্থান যেদিকে জীবন তাড়িত হচ্ছে। এর হাত থেকে দৌড়ে পালানো মানেই একে আঁকড়ে ধরা। এ বিষয়ের গুপ্ত রহস্য অনুসন্ধান করার জন্য কত দিনই না। আমি কাটিয়েছি, কিন্তু আল্লাহ এ রহস্য উদঘাটনের অনুমতি দেন নি। আহা! এটা হলো একটা সংরক্ষিত গুপ্ত জ্ঞান। তোমাদের প্রতি আমার শেষ অছিয়াত হলো আল্লাহ সম্বন্ধে, তার কোন অঅংশীদার আছে বলে বিশ্বাস করো না এবং মুহাম্মদ (সঃ) সম্বন্ধে আমার অছিয়াত হলো তার সুন্নাহর প্রতি কোনরূপ অশ্রদ্ধা ও অবহেলা প্রদর্শন করো না। এ দুটি স্তম্ভকে ধরে রেখো এবং এ দুটি বাতি জ্বলিয়ে দিও। এ দুটো থেকে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত কোন পাপ তোমাদেরকে স্পর্শ করতে পারবে না। তোমাদের প্রত্যেককেই তার নিজের (পাপের) বোঝা বহন করতে হবে। অজ্ঞদের জন্য এ বোঝা হালকা করা হয়েছে। আল্লাহ পরম দয়ালু। ইমান সহজ সরল। রাসুল (সঃ) জ্ঞানের আধার। গতকাল আমি তোমাদের সাথি ছিলাম। আজ আমি
তোমাদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের বিষয়বস্তু হয়েছি। এবং আগামীকাল আমি তোমাদেরকে পরিত্যাগ করবো। আল্লাহ আমাকে ও তোমাদেরকে ক্ষমা করুন।
এ পিচ্ছিল স্থানে যদি পা সুদৃঢ় রাখতে পার তবেই উত্তম। কিন্তু পা যদি ফসকে যায়। তবেই সর্বনাশ । এ পদস্থলনের কারণ হলো শাখার ছায়া তলে না থাকা বাতাসের প্রবাহ ও মেঘের শামিয়ানার স্তর অনেক উৰ্ধ-আকাশে যার চিহ্নমাত্রও এ পৃথিবীতে দেখা যায় না। আমি তোমাদের প্রতিবেশী ছিলাম। আমার দেহ কিছুদিন তোমাদের সঙ্গী ছিল এবং সহসাই তোমরা আমার চলমান দেহকে স্থির, নিশ্চল ও শূন্য অবস্থায় দেখতে পাবে। এ ভাষণের পর আমি নিচুপ হয়ে যাব। সুতরাং আমার এ নীরবতা, মুদ্রিত চক্ষু, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নিশ্চলতা ও দেহের অসাড়তা তোমাদের জন্য উপদেশ যোগাবে, কারণ যারা এটা থেকে শিক্ষা গ্ৰহণ করে তাদের জন্য এর চেয়ে বড় কোন উপদেশ আর হতে পারে না। আমি তোমাদের কাছ থেকে প্রস্থান করে এমন একজনের কাছে যাচ্ছি। যার সাক্ষাতের জন্য আমি অধিক আগ্রহী। আগামীকাল তোমরা আমার দিনগুলোর (জীবনের কর্মকান্ডের) প্ৰতি লক্ষ্য করে দেখবে তখন আমার বাতেন তোমাদের কাছে প্রকাশ পাবে। আমার স্থান শূন্য হবার পর সেখানে অন্য কেউ অধিষ্ঠিত হলে তোমরা আমাকে বুঝতে পারবে।