— ঈয়াযীদ মোটেই দায়ী নন —-
পর্ব – ০৩ ।
ইদানীং অনেকেই বলে থাকেন যে , কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার জন্য ঈয়াযীদ মোটেই দায়ী নন ।
বেশ ভাল কথা ।
কথা বলার স্বাধীনতা সকলের আছে , হোক সে কথাটা খাঁটি সত্য অথবা ডাঁহা মিথ্যা ।
প্রিয় পাঠক ,
সংগত কারনে এখানে শীয়াদের রেফারেন্স দেয়া যাচ্ছে না ।
আসুন দেখে নেই ,
সুন্নি ভাইদের বিখ্যাত ইতিহাসবিদগনের কিতাব কি বলে –
পর্ব – ০৩ ,
উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ কারবালা প্রান্তরে অবরুদ্ব করে রাখা ইমাম হোসেন (আঃ) এর বিষয় নিজের থেকে কখনই কোন পদক্ষেপ নেয় নি —
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে , কারবালা প্রান্তরে ইমাম হোসেন (আঃ) এর শাহাদাত পর্যন্ত ঈয়াযীদ এবং ইবনে যিয়াদের মধ্যে অবিছিন্নভাবে যোগাযোগ ছিল । কারন ঈয়াযীদ তাকে নির্দেশ দিয়েছিল , সে যেন সবসময় তার সাথে যোগাযোগ রাখে এবং ছোট বড় সকল বিষয় যেন দূত মারফত তাকে অবহিত করে ।
তাবারী লিখছেন যে , মুসলিম ইবনে আকীল ও হানীকে হত্যার পর ইবনে যিয়াদ তাদের উভয়ের মাথা কেটে সিরিয়ায় ঈয়াযীদের রাজদরবারে প্রেরন করে ।
ঈয়াযীদ তাদের কর্তিত মাথা দেখার পর বেশ কিছু দিক নির্দেশনা সম্বলিত একটি পত্র ইবনে যিয়াদকে প্রেরন করে ।
তাতে সে উল্লেখ করে , ” আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে , হোসেন কুফার দিকে যাত্রা করেছে । হোসেনের সাথে যারা যোগাযোগ রাখে তাদের প্রতি কড়া নজর রাখ এবং তাদের সনাক্ত করার জন্য কুফার গুপ্তচরদের নিয়োগ দাও ও সে সকল লোকদের গ্রেফতার কর । যে কোন অজুহাতে হোসেনের অনুসারীদের বন্দি কর । আর কুফায় যাই ঘটুক না কেন আমাকে অতিসত্বর জানাবে । তোমার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক ” ।
এই প্রসংগে ইবনে আসাকির বর্ননা করেছেন যে , ঈয়াযীদ যখন জানতে পারে যে , ইমাম হোসেন (আঃ) কুফার দিকে রওয়ানা হয়েছেন তখন সে ইবনে যিয়াদের নিকট দূত মারফত নির্দেশ দেয় যে , তাঁর সাথে সর্বাত্মক যুদ্ব করার জন্য ও তাঁকে জীবিত অথবা মৃত সিরিয়ায় পাঠাতে ।
ইবনে আসামের বর্ননায় এসেছে যে , কুফার গর্ভনর হিসাবে ঈয়াযীদ কতৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ইবনে যিয়াদ কুফার জনগনের উদ্দেশ্যে বলে যে , ঈয়াযীদ ইবনে মূয়াবীয়া আমার নিকট পত্র ও চার হাজার দিনার (স্বর্নমুদ্রা ) ও দুই লক্ষ দিরহাম প্রেরন করেছেন । এই সমুদয় অর্থ তোমাদের মাঝে বিতরন করার নির্দেশ দিয়েছেন । তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে , আমি যেন তোমদেরকে তার শত্রু হোসেন ইবনে আলীর বিরুদ্বে যুদ্বে পাঠাই এবং তোমাদের তার আনুগত্যের দাওয়াত দেই ।
আল্লামা সুয়ুতী লিখেছেন যে , ঈয়াযীদ এক পত্রে কুফায় তার নিযুক্ত গর্ভনর ইবনে যিয়াদকে হোসেনের বিরুদ্বে যুদ্বের ও তাঁকে হত্যার নির্দেশ দেয় ।
ঐতিহাসিক এ বর্ননাগুলো থেকে এটা খুব সুস্পষ্ট যে , কুফায় যা কিছু ঘটত ঈয়াযীদ সে সকল বিষয় শুধু অবহিত ছিল না , বরং ইবনে যিয়াদ যা কিছু করত তা ঈয়াযীদের অনুমতি সাপেক্ষে ও তার দিকনির্দেশনা মোতাবেক করত ।
ফলে উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদের সকল কর্মের দায় মূলত ঈয়াযীদ ইবনে মূয়াবীয়ার উপর বর্তায় ।
সূত্র – তারিখে তাবারী , ৪র্থ খন্ড , পৃ – ২৮৫ / ইবনে আসাকির , মুখতাসারু তারিখি দামেশক , ১৪তম খন্ড , পৃ – ২০৮ / ইবনে আসাম , আল ফুতুহ , ৩য় খন্ড , পৃ – ৮৯ / আল্লামা সুয়ুতী , তারিখুল খোলাফা , পৃ – ১৯৩ ।
ইনশা আল্লাহ , আসছে ,
পর্ব – ০৪ —
ইমাম হোসেন (আঃ) এর হত্যায় ঈয়াযীদ আনন্দ ও দম্ভ প্রকাশ করেছিল ।
 
ইমাম হুসাইন (আঃ) এর হত্যায় ঈয়াযীদের ভূমিকা ,
সংকলনে – আবু যাহরা ,
প্রকাশনায় – আশেকানে আহলে বাইত , বাংলাদশ ,
পৃষ্ঠা – ৫ , ৬ থেকে সংকলিত ও সংগৃহীত ।
SKL