হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ও আয়েম্মা মাসুমিন (আঃ) রা তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক ফজিলত এরশাদ করেন । হাদিসে বর্ণনা করা হল যে, তাহাজ্জুদের এক রাকাত নামাজ এক হাজার বছরের ইবাদতের সমান এবং দুনিয়া ও আখিরাতের হাজার হাজতকে আল্লাহ পুরন করবেন । কেয়ামতের দিন যখন তাকে কবর থেকে তোলা হবে তখন ফেরেশতাগণ তাকে সু-সংবাদ দিবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার সাথে সাথে থাকবে।

নিয়তঃ তাহাজ্জুদের নামাজ এগার রাকাত যার মধ্যে আট রাকাত নামাজে শাব বা তাহাজ্জুদের নামাজ নিয়তে পড়তে হবে।

নিয়ম-দুই দুই রাকাত করে ফজরের নামাজের মত পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহা পরে সূরা ইখলাস পড়তে হবে। আর দ্বিতীয় রাকাত সূরা ফাতেহার পর সূরা কাফিরুন পড়তে হবে। বিঃদ্রঃ (কুনুত যত বড় পড়বেন তত ভালো) দোয়া পরে সেজদা শুকর করবেন। নামাজ শেষে হযরত ফাতেমা যাহরা (সাঃ)- এর তাসবীহ পড়া অনেক সাওয়াব আছে।

আট রাকাত পড়ার পর দুই রাকাত নামাজে "শাফ'য়" পড়তে হয়। এই নামাজ পড়ার নিয়মাবলী- প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস বা সূরা ফালাক পড়তে হয়। আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা নাস পড়তে হয়। এই নামাজে কুনুত নাই তাসবীহ পড়া উত্তম। আর দোয়া এবং সেজদা শুকর করা ভালো।

তারপর এক রাকাত নামাজে বিতর পড়তে হবে। সূরা ফাতিহার পর তিনবার সূরা ইখলাস তিনবার সূরা ফালাক তিনবার সূরা নাস পড়তে হবে। তারপর হাত উঠিয়ে দোয়া এ কুনুত পড়তে হয়,

لآ اِلَهَ اِلاَّ اللّهُ الْحَلِيْمُ الْكَرِيْمُ لآ اِلَهَ اِلاَّ اللّهُ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ سُبْحَانَ اللّهِ رَبِّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَ رَبِّ الاَرْضِيْنَ السَّبْعِ وَ مَا فِيْهِنَّ وَ مَا بَيْنَهُنَّ وَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ وَ الْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ

"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারীম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আলিয়্যল আযিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বিস সামাওয়াতিস সাবয়ি ওয়া রাব্বিল আরযীনাস সাবয়ি ওয়া মা ফি হিন্না ওয়া মা বাইনা হুন্না ওয়া রাব্বিল আরশীল আযিমি, ওয়া সালামুন আলাল মুরসালিন ওয়াল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন"।

দোয়া পড়ার পর চল্লিশ জন মুমিনের জন্য নাম নিয়ে মাগফেরাত চাওয়া দরকার এই দোয়াটি বলবেঃ

اَللّهُمَّ اغْفِرْ ل

"আল্লাহুম্মাগ ফির ..............." যে মোমিনের জন্য দোয়া চাওয়া হয় তার নাম নিতে হবে।

তারপর ৭০ বার

اَسْتَغْفِرُ اللّهَ رَبِّي وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ

"আস্তাগ ফিরুল্লাহা রাব্বি ওয়া আতুবু ইলাইহি"

তারপর ৩০০ বার,

اَلْعَفْوَ

"আল আফ"

তারপর ৭ বার

هذَا مَقَامُ الْعَآئِذِ بِكَ مِنَ النَّارِ

"হাযা মাকামুল আ-ইযযি বিকা মিনান নারি"

তারপর বলতে হয়

رَبِّ اغْفِرْ لِي وَ ارْحَمْنِي وَ تُبْ عَلَيَّ اِنَّكَ اَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ

"রাব্বেগফিরলি ওয়ারহামনি ওয়াতুব আলাই-য়া ইন্নাকা আনতাত তাও ওয়াবুর রাহিম"।

তারপর রুকু, সিজদাহ, তাশাহুদ সালাম পরে নামাজ শেষ করে তাসবীহে হযরত ফাতেমা যাহরা (সাঃ) পড়তে হবে। তারপর দোয়া- আর এই সময়ে দোয়া কবুল হওয়ার উত্তম সময়। (নামাজে তাহাজ্জুদের সময় অর্ধ রাত্রির পরে নামাজে তাহাজ্জুদ পড়তে হয় এবং ফজরের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত সময় থাকে।

নামাজ মন দিয়ে পড়া দরকার। নামাজে আল্লাহকে মনে করে ক্রন্দন করে পড়া দরকার কেননা এটা থেকে নামাজে খুজু ও খুশু আসে। আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করে ক্রন্দন করলে চোখের এক ফোটা পানি জাহান্নামের আগুনকে ঠাণ্ডা করে দিতে পারে।