বিশ্লেষনধর্মী কিছু তিক্ত কথামালা —-
 
 
আশারা মোবাশশারা —
ইহজীবনে জান্নাতের আগাম সুসংবাদপ্রাপ্ত ।
 
 
এই হাদিসটি আমাদের প্রচলিত ইসলামে বহুল প্রচারিত একটি হাদিস ।
বলা হয়ে থাকে যে , কমপক্ষে দশজন সাহাবাগনকে তাদের ইহজীবনেই জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে ।
 
পাঠক ,
এই হাদিসটির সত্যতা নিয়ে আজ কোন আলোচনা নয় ।
সময় সুযোগ মত পরে কোন এক সময় হাদিসটির সত্যতা নিয়ে তথ্যবহুল আলোচনা করা যাবে , ইনশা আল্লাহ ।
কেননা এই হাদিসটি লেখা ও বাজারজাতকরন হয়েছে নবীবংশ বনু হাশিম গোত্রের চরম শত্রু ক্ষমতাসীন বনু উমাইয়া সরকার কতৃক !
 
যাইহোক ,
আলাপের মূল প্রসংগে আসছি ।
বহুল প্রচারিত এই হাদিসটির প্রাসঙ্গিক কিছু বিশ্লেষনধর্মী কথামালা ।
আশারা মোবাশশারা বা ইহজীবনে জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সম্পর্কে সহীহ সিত্তাহ সহ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বিখ্যাত তাফসীরকারকগনের গ্রন্থে যে সকল ঘটনার বর্ননা দেয়া আছে তাতে করে এই হাদিসটির সত্যতা অনেকাংশেই সন্দেহের মধ্যে পড়ে যায় ।
 
 
যেমন ,
বলতে কি পারবেন –
জান্নাতের সার্টিফিকেটধারী হযরত আবু বকর এবং হযরত ওমর রাসুলের (সাঃ) পরিস্কার নির্দেশ সত্বেও ওসামার নেতৃত্বে যুদ্বে না যেয়ে মদীনার কাছে পালিয়েছিলেন কেন ?
 
বলতে কি পারবেন –
জান্নাতের সার্টিফিকেটধারী হযরত ওমর নিজে রাসুল (সাঃ) এর পরিস্কার নির্দেশ সত্বেও খাতা কলম না দিয়ে উল্টো রাসুল (সাঃ) মৃত্যু যন্ত্রনায় পাগলের প্রলাপ বকছেন – এই জাতীয় ধৃষ্টতাপূর্ন কথা কি করে বলতে পারলেন ?
 
বলতে কি পারবেন –
খাত কলম না দেবার জন্য রাসুলের (সাঃ) পবিত্র গৃহ থেকে স্বয়ং রাসুল (সাঃ) কতৃক বিতাড়িত হযরত ওমর কি ভাবে আশারা মোবাশশারা বা ইহজীবনে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ হলেন ?
 
বলতে কি পারবেন –
জান্নাতের সার্টিফিকেটধারী হযরত আবু বকর এবং হযরত ওমর মদীনাতে অবস্থান করা সত্বেও এবং রাসুলের (সাঃ) ইন্তেকালের সংবাদ জানা সত্বেও রাসুলের (সাঃ) জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহন না করে বনু সকীফাতে কি এমন রাজকার্যে ব্যস্ত ছিলেন ?
 
বলতে কি পারবেন –
জান্নাতের সার্টিফিকেটধারী হযরত আবু বকর নবীকন্যার বৈধ পৈত্রিক সম্পত্তি বাগে ফাদাক অবৈধ ভাবে কেন ছিনিয়ে নিলেন ?
 
বলতে কি পারবেন –
জান্নাতের সার্টিফিকেটধারী হযরত আবু বকর এবং হযরত ওমরের সাথে খাতুনে জান্নাত ফাতেমা যাহরা (সাঃআঃ) সকল সম্পর্ক ছিন্নকরন সহ কথা বলা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন কেন ?
 
বলতে কি পারবেন –
জান্নাতের সার্টিফিকেটধারী হযরত আবু বকর এবং হযরত ওমরকে জান্নাতে খাতুন ফাতেমা (সাঃআঃ) কেন তাঁর নিজের জানাজাতে অংশগ্রহন না করার জন্য ওসিয়ত করেছিলেন ?
 
বলতে কি পারবেন –
জান্নাতের সার্টিফিকেটধারী হযরত তালহা হযরত আলীর (আঃ) এর প্রতি বাইআত ভংগ জঙ্গে জামালের যুদ্বে হযরত আলী (আঃ) এর বিরুদ্বে যুদ্ব করেছিলেন কেন ?
 
পবিত্র কোরআন যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে বলছে যে ,
“ – বল , আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোন পুরস্কার চাই না , শুধু আমার রক্তজ বংশধরদের প্রতি গভীর ভালবাসা ছাড়া – “ ।
সুরা – শুরা / ২৩ ।
 
সংগত কারনেই প্রশ্ন চলে আসে যে , পবিত্র কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ থাকার পরেও রাসুল (সাঃ) পবিত্র রক্তজ বংশধর তথা আহলে বাইত (আঃ) গনের প্রতি এই জাতীয় কর্মকান্ডের পরেও ওনারা কি ভাবে আশারা মোবাশশারা বা ইহজীবনে জান্নাতের আগাম সুসংবাদপ্রাপ্ত হতে পারেন ?
 
 
 
পাঠক ,
লেখাটিতে উল্লেখিত প্রতিটি তথ্য সহীহ সিত্তাহ হাদিস গ্রন্থ এবং প্রশ্নগুলির জবাব সহীহ সিত্তাহ হাদিস গ্রন্থে এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বিখ্যাত তাফসীরকারকগনের গ্রন্থে বিদ্যমান আছে ।
 
আপনি যথেষ্ট সচেতন ও শিক্ষিত ব্যক্তি ।
আশা করি নিরপেক্ষ মন নিয়ে কথাগুলি ভেবে দেখবেন , প্লীজ ।
 
এরপরে সময় সুযোগ মত সময় বনু উমাইয়া কতৃক জাল , মিথ্যা ও বানোয়াট হাদিস “আশারা মোবাশশারা” নিয়ে বিস্তারিত কথা হবে , ইনশা আল্লাহ !
SKL