বাগে ফাদাক রক্ষা করার জন্য মা জননী ফাতিমা (সাঃআঃ) এর আপ্রাণ চেষ্টার দর্শন !
চিন্তা ও দর্শন বিভাগ –
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওফাতের মাত্র কয়েক দিনের মাথায় মুসলমানদের মধ্যে একটি বিপথগামী গোষ্ঠি যখন আহলে বাইত (আঃ) এর ন্যায়সঙ্গত অধিকারকে ভূ-লুন্ঠিত করেছিল , তখন নবী নন্দিনী হযরত ফাতেমা যাহরা (সাঃআঃ) মসজিদে নব্বীতে এসে এক ঐতিহাসিক খুতবার মধ্য দিয়ে ইমামতের বিষয়টি সমস্ত মুসলমানদের নিকট আবারও সুস্পষ্ট করেন ।
শাবিস্তান বার্তা সংস্থার রিপোর্ট –
নবী নন্দিনী মা জননী ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ) তাঁর শাহাদতের মাত্র কয়েক দিন আগে মসজিদে নব্বীতে এসে আনসার ও মুহাজিরদের সম্মুখে এক ঐতিহাসিক খুতবা দান করেন ।
তিনি এ খুতবাতে প্রথম ও দ্বিতীয় খলীফা কর্তৃক বাগে ফাদাক জবর দখলের প্রতিবাদ জানান ।
এ কারণে এ খুতবাটির নাম খুতবায়ে ফাদাকিয়্যাহ হিসেবে প্রসিদ্ধ হয়েছে ।
বাগে ফাদাক মদীনার একটি উর্বব ভূমির নাম , যা রাসূল (সাঃ) মহান আল্লাহর হুুকুমে স্বীয় কন্যা ফাতেমা যাহরা (সাঃআঃ) কে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন ।
কিন্ত রাসূল (সাঃ) এর ওফাতের পর তা জবর দখল করে নেয়া হয় ।
তিনি বলেন , যদি হযরত ফাতেমা যাহরা (সাঃআঃ) এর এই ঐতিহাসিক খুতবাটি পর্যালোচনা করা হয় , তাহলে দেখা যাবে যে , তিনি এ খুতবাতে রাসূল (সাঃ) এর ওফাতের পর একশ্রেণীর সাহাবিদের মাঝে মারাত্মক বিচ্যুতি , আহলে বাইত (আঃ) এর প্রতি প্রচন্ড অবিচার এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) কর্তৃক নির্বাচিত ও ঘোষিত স্থলাভিষিক্ত আমিরুল মু’মিনিন আলী (আঃ) এর অধিকার হরনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ।
তিনি আবারও মুসলমানদের নব্যুয়াতের পর ইমামতের গুরুদায়িত্ব সম্পর্কে মুসলমানদের স্বরন করিয়ে দিয়েছেন ।
তিনি বলেন , যদি কেউ মনে করে যে , বাগে ফাদাক পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে ফাতেমা যাহরা (সাঃআঃ) এ খুতবা দিয়েছেন , তাহলে চরম ভূল হবে ।
কেননা খাতুনে জান্নাতের নিকট এমন পার্থিব একটি ভূ-খন্ড আদৌ গুরুত্ব রাখে না । বরং তিনি এ খুতবার মাধ্যমে ইমামত সম্পর্কে মুসলমানদের সচেতন করার চেষ্টা করেছেন ।
তিনি বলেন , এ ঐতিহাসিক খুতবার একটি বিশাল অংশই আমিরুল মু’মিনিন আলী (আঃ) এর খেলাফত ও ইমামতের বিষয়কে ঘিরে ।
কারণ তিনি এটা খুব সহজেই বুঝতে পারছিলেন যে , মুসলমানরা যদি ইমামতের পথ থেকে দূরে সরে যায় , তাহলে তাদের জন্য নির্ঘাত বিচ্যুতি অপেক্ষা করছে ।
তাই তিনি এ খুতবার বিভিন্ন অংশে মুসলমানদের নব্যুয়াত ধারার সম্পাতির পর ইমামত ধারার দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ।
তিনি আরও বলেন , নবী নন্দিনী হযরত ফাতেমা যাহরা (সাঃআঃ) এর নিকট এটা খুবই সুস্পষ্ট ছিল যে , যদি মুসলমানরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) কর্তৃক ঘোষিত ইমামত ধারার প্রথম ইমাম আমিরুল মু’মিনিন আলী (আঃ) কে ত্যাগ করে , তাহলে ইসলামের প্রকৃত গতি অন্য দিকে মোড় নিবে ।
আর শেষ পর্যন্ত তাই হল যখন মুসলমানরা তাঁর ফরিয়াদে সাড়া দেয়নি , তখন কিছু স্বার্থবাদী তথাকথিত সাহাবি মুসলমানদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ।
ইমামতের গুরুত্ব সম্পর্কে নবী নন্দিনী (সাঃআঃ) বলেছেন যে , ইমামতের বিষয়টি পবিত্র কাবা গৃহের ন্যায় ।
যেমনভাবে পবিত্র কাবা গৃহকে ঘিরে সবাই পরিবৃত্ত হয় , তেমনভাবে মুসলমানদের উচিৎ মাসুম ইমাম (আঃ) কে ঘিরে পরিবৃত্ত হওয়া এবং পবিত্র বার ইমাম (আঃ) গণের হেদায়েত থেকে উপকৃত হওয়া ।
SKL