আজারবাইজানের গভর্নর আশআছ ইবনে কায়েসকে (আল-কিন্দি) লেখেছিলেন।
নিশ্চয়ই, তোমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব’ এক গ্রাস খাদ্য নয়। এটা এমন এক বিষয় যা তোমার গ্ৰীবা জড়িয়ে রয়েছে এবং জনগণের নিরাপত্তার জন্য তোমার উপরস্থদের পক্ষে তোমাকেই জবাবদিহি করতে হবে। জনগণের প্রতি অত্যাচারী হওয়া তোমার সাজে না, আবার যথাযথ ক্ষেত্র ব্যতীত নিজকে বিপদাপন্ন করাও তোমার উচিত হবে না। তোমার হাতে যে পরিমাণ অর্থ-সম্পদের তহবিল আছে তা সর্বশক্তিমান ও ক্ষমতাশালী আল্লাহর সম্পদ। যে পর্যন্ত তুমি তা আমার কাছে পাঠিয়ে না দেবে সে পর্যন্ত তার দায়-দায়িত্ব তোমার। আমি কোনমতেই তোমার জন্য কুশাসকদের একজন হতে পারবো না এবং বিষয়টি এখানেই শেষ কাবলাম ।
১। জামালের যুদ্ধ শেষ হবার পর আজারবাইজানের গভর্নর আশআছ ইবনে কায়েসকে (আল-কিন্দি) আমিরুল মোমেনিন এ পত্র লেখেছিলেন। আশাআছ উসমানের সময়কাল থেতেই আজারবাইজান এলাকার গভর্নর ছিল। এ প্রদেশের রাজস্ব আয় প্রেরণ করার জন্য এ পত্রে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উসমান হত্যার পর হতে আশআছ নিজের অবস্থা সম্পর্কে ভীত হয়ে পড়ে। ফলে উসমানের সময়কার অন্যান্য অফিসারের মতো সেও প্রাপ্ত রাজস্ব আত্মসাৎ করার ফন্দি এঁটেছিলো। এ পত্র পাওয়ার পর সে তার প্রধান আমাত্যগণকে ডেকে বললো, “আমার ভয় হয়, এ অর্থ আমার কাছ থেকে নিয়ে যাবে। কাজেই মুয়াবিয়ার সাথে যোগদান করাই বাঞ্ছণীয়।” উপস্থিত সকলেই বললে, “আমরা তোমার জ্ঞাতি গোষ্ঠী। আমাদেরকে ফেলে তুমি মুয়াবিয়ার আশ্রয়ে চলে যেতে চাচ্ছে—এটা বড়ই লজ্জার বিষয়।” তাদের কথা শুনে আশআছ পালিয়ে যাবার ইচ্ছা পরিত্যাগ করলো। কিন্তু সে রাজস্ব প্রেরণ করতে রাজি হলো না। ইতোমধ্যে সংবাদ পেয়ে আমিরুল মোমেনিন তাকে কুফায় নিয়ে যাবার জন্য হুজর ইবনে আদি আল-কিন্দিকে প্রেরণ করলেন। হুজর তাকে বুঝিয়ে-শুজিয়ে কুফায় নিয়ে এলো। কুফায় এসে সে চার লক্ষ দিরহাম জমা দিলে আমিরুল মোমেনিন তাকে ত্ৰিশ হাজার দিরহাম দিয়ে দিলেন এবং অবশিষ্ট অর্থ সরকারি তহবিলে জমা দিয়েছিলেন।