খারিজিদের উদ্দেশ্যে আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
ঝড় তোমাদের অতর্কিতে অভিভূত করতে পারে যখন তোমাদের খোচা দেয়ার (সংস্কারের জন্য) মতো কেউ থাকবে না। ইমানে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এবং রাসুলের সাথী হয়ে যুদ্ধ করেও কি আমি আমার ধর্মত্যাগের সাক্ষী হব? “সে ক্ষেত্রে আমি বিপথগামী হব এবং সৎপথ প্রাপ্তাদিগের অন্তর্ভুক্ত থাকব না।” (কুরআন, ৬ ঃ ৫৬)। সুতরাং তোমরা তোমাদের পাপের স্থানসমূহে ফিরে যেতে পার এবং তোমাদের পদাঙ্কও তোমরা ফিরে পাবে। সাবধান, নিশ্চয়ই আমার পরে তোমরা নিদারুণ অসম্মান ও ধারালো তরবারিতে বিপর্যপ্ত হবে এবং অত্যাচারী কর্তৃক গৃহীত হাদিস তোমাদের প্রতি মানদন্ড হিসাবে ব্যবহৃত হবে ।
১। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, আমিরুল মোমেনিনের পর খারিজিরা সর্বপ্রকার অমর্যাদা ও অসম্মান ভোগ করেছিল এবং যেখানেই তারা মাথা তুলতে চেষ্টা করেছে সেখানেই তরবারি ও বর্শার মুখোমুখি হয়েছে। জিয়াদ ইবনে আবিহা, উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ, হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ, মুসা’ব ইবনে জুবায়ের ও মুহাল্লাব ইবনে আবি মুফারাহ খারিজিগণকে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে নির্মূল করার জন্য সমস্ত উপায় অবলম্বন করেছিল; বিশেষ করে মুহাল্লাব উনিশ বছর ধরে তাদের তাড়া করেছে এবং তাদেরকে ধ্বংস করে ক্ষান্ত হয়েছিল। তাবারী লেখেছেন যে, দশ হাজার খারিজি সিল্লাওয়া সিল্লি ব্রা (আহওয়াজ পার্বত্য এলাকার একটা পর্বত) পর্বতে জড়ো হয়েছিল। তখন মুহাল্লাব তাদেরকে এত তীব্র আক্রমণ করেছিল যে, সাত হাজার খারিজি নিহত হয়েছিল। অবশিষ্ট তিন হাজার খারিজ জীবন বাচানোর জন্য কিরমান এলাকায় পালিয়ে গেল। কিন্তু পারস্যের গভর্নর তাদের বিদ্রোহাত্মক কার্যকলাপ লক্ষ্য করে সাবুর এলাকায় তাদের ঘিরে ফেললো এবং অধিকাংশ খারিজিকে হত্যা করলো। যারা রক্ষা পেলো তারা ইসফাহানে ও কিরমানে পালিয়ে গেল। সেখানে তারা একটা বাহিনী গঠন করে বসরা হয়ে কুফা অভিমুখে অগ্রসর হলো। হারিছ ইবনে আবি রাবিয়াহ্ আল-মাখজুমি এবং আবদার রহমান ইবনে মিখনাফ আল-আজদি ছয় হাজার যোদ্ধা নিয়ে তাদের গতিরোধ করলো এবং তাদেরকে ইরাকের সীমানার বাইরে তাড়িয়ে দিয়েছিল। এভাবে বার বার আক্রমণের ফলে খারিজিরা তাদের সামরিক শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং শহরাঞ্চল থেকে বিতাড়িত হয়ে মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াতে থাকে। এরপরও যেখানেই তারা দল বেঁধেছে। সেখানেই তাদের ধ্বংস করা হয়েছে (তাবারী**, ২য় খন্ড, পৃঃ ৫৮০-৫৯১:আছীর, ৪র্থ খন্ড, 78నU-Qంు) |