আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
আমার পরে খারিজিদের সাথে যুদ্ধ’ করো না, কারণ যে ন্যায় অনুসন্ধান করে কিন্তু তা খুঁজে পায় না। সে ওই ব্যক্তির মতো নয় যে অন্যায় অনুসন্ধান করে এবং তা খুঁজে পায়।
১। খারিজিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করার আদেশ দানের কারণ হলো—তিনি স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাঁর পরে কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা এমন অজ্ঞ লোকদের (মুয়াবিয়া ও তার দল) হাতে চলে যাবে যারা জিহাদের যথার্থতা বুঝতে পারবে না এবং তারা শুধু তাদের প্রভাব টিকিয়ে রাখার জন্য তরবারি ব্যবহার করবে। এমনকি তাদের কেউ আমিরুল মোমেনিনের কুৎসা রটনা করার জন্য খারিজিদেরকে উৎসাহিত করবে। সুতরাং যারা নিজেরাই অন্যায় করে তারা সেসব লোকের সাথে যুদ্ধ করতে পারে যারা ভুলবশত অন্যায় করছে। এভাবে আমিরুল মোমেনিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, খারিজদের বিপথগামিতা ইচ্ছাকৃত নয়—শয়তানের প্রভাব। তারা অন্যায়কে ন্যায় বলে গ্রহণ করে তাতেই দৃঢ় রয়েছে। অপরদিকে মুয়াবিয়া ও তার দল বুঝে-শুনেই ন্যায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অন্যায়কে তাদের আচরণ বিধি হিসাবে গ্রহণ করেছে। দ্বিনের ব্যাপারে তাদের ধৃষ্টতা এমন এক পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে যে, এটাকে ভুল বুঝার ফল বলা যায় না, আবার বিচারের ভ্রমাত্মক লেবাসও বলা যায় না। কারণ তারা প্রকাশ্যে দ্বিনের সীমালজান করেছিল এবং তাদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণার বাইরে রাসুলের (সঃ) আদেশনিষেধকে আমল দেয় নি। হাদিদ”** (৫ম খন্ড, পৃঃ৯৩০) লেখেছেন যে, মুয়াবিয়াকে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বাসনকোসন ব্যবহার করতে দেখে সাহাবা আবু দারদা বললেন, “রাসুলকে (সঃ) বলতে শুনেছি— যে কেউ স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্রে পান করবে। সে উদরে দোযখের আগুনের জ্বালা পোহাবে।” মুয়াবিয়া বললো, “এটা আমার জন্য ক্ষতিকর নয়।” একইভাবে সে জিয়াদ ইবনে আবিহর (তার পিতার জারজ সন্তান) সাথে তার খুশিমতো রক্তের সম্পর্ক গড়েছিল যা শরিয়াত সিদ্ধ নয়। সে মিম্বারে বসে রাসুলের আহলুল বাইতকে গালিগালাজ করতো এবং শরিয়তের সীমালঙ্ঘন করে চলতো। সে নির্দোষ লোকদের রক্তপাত ঘটিয়েছিল এবং দুশ্চরিত্র ও পাপী লোকদেরকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল।