দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা সংঘটিত হবার আগেই যেসব অনুচর পৃথিবী থেকে চলে
গেছে তাদের সম্বন্ধে
আল্লাহ, অমুক অমুক ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করুন, যারা বক্রকে সোজা করেছে, রোগের চিকিৎসা করেছে, ফেতনা পরিহার করেছে এবং সুন্নাহকে’ পুরস্কৃত করেছে। সে এ পৃথিবী থেকে নির্দািগ কাপড় ও অতি সামান্য দোষত্রুটি নিয়ে প্রস্থান করেছিলো। সে এ দুনিয়ার সত্য-সুন্দর-মঙ্গলকে আঁকড়ে ধরেছিলো এবং দুনিয়ার অকল্যাণ ও পাপ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পেরেছিলো। সে আল্লাহর আনুগত্য করেছিল এবং তাকে যতটুকু ভয় করা দরকার ততটুকু ভয় করেছিলো। সে চলে গেল। কিন্তু বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত পথে মানুষকে রেখে গেছে যাতে পথভ্রষ্টগণ হেদায়েতও পাচ্ছে না এবং হেদায়েত প্রাপ্তগণ কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছে না ।
১। ইবনে আবিল হাদীদ’ (১৪শ খন্ড, পৃঃ ৩-৪) লেখেছেন যে, আমিরুল মোমেনিন এ খোৎবায় দ্বিতীয় খলিফা উমরকে ইঙ্গিত করেছেন এবং তার প্রশধ্বংসা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, শরীফ রাজীর স্বহস্তে লেখিত নাহাজ আল- বালাঘার পাণ্ডুলিপিতে “অমুক অমুক’ শব্দের নিচে “উমর” শব্দটি লেখা আছে। সবচেয়ে পুরানো পাণ্ডুলিপি এখনো রয়েছে। এ পাণ্ডুলিপিতে “অমুক অমুক’ শব্দের নিচে “উমর” শব্দটি লেখা আছে বলে কোন প্ৰমাণ পাওয়া যায় নি। শরীফ রাজীর সমসাময়িক অনেকেই নাহাজ আল-বালাঘার টীকা লেখেছেন। তাদের কেউ এমন কথা লেখেন নি যে, “অমুক অমুক” শব্দের নিচে “উমর” শব্দটি ছিল। হাদীদ ব্যতীত আর কোন লেখক বা ঐতিহাসিক একথা বলে নি। শরীফ রাজীর দুইশত পঞ্চাশ বছর পরে হাদীদ কোথায় কিভাবে রাজীর স্বহস্তে লেখিত পাণ্ডুলিপি দেখতে পেয়েছে তার কোন উল্লেখ তিনি করেন নি। হাদীদের কথা মেনে নিয়ে যদি ধরা হয় যে, “অমুক অমুক’ শব্দের নিচে রাজীর হাতের লেখায় “উমর” শব্দটি লেখা ছিল তবুও এটা রাজীর একান্ত নিজস্ব টীকা ব্যতীত অন্য কিছু নয়। অনেক খোৎবাতেই রাজী এ রকম টীকা লিখেছেন। এ রকম টীকাকে মূল খোৎবা বলে গ্রহণ করা যায় না। শরীফ রাজীর সমসাময়িক আল্লামা আলী ইবনে নাসির নাহাজ আল-বালাঘার বিস্তারিত টীকা লেখে যে গ্ৰন্থ প্রকাশ করেছেন তার নাম “আলাম নাহাজ আল-বালাঘা।” এ খোৎবাটি সম্পর্কে উক্ত টীকা গ্রন্থে তিনি লেখেছেনঃ আমিরুল মোমেনিন তাঁর নিজের একজন অনুচরের সদাচরণে তাঁর প্রশধ্বংসা করে এ খোৎবা দিয়েছিলেন । আল্লাহর রাসুলের ইনতিকালের পর যে সব বিপদাপদ ও দুর্যোগে আপতিত হয়েছিল তার পূর্বেই সে মারা গেছে । আল্লামা কুতবুদ্দিন আর-রাওয়ান্দি (মৃত্যু ৫৭৩। হিঃ) তার লেখিত নাহাজ আল-বালাঘার টীকা গ্রন্থে নাসিরের – উপরোক্ত মতের সমর্থন করেন।
বাহারানী’ (৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৯৭) শারহে নাহাজ আল-বালাঘা গ্রন্থে লেখেছেনঃ আমিরুল মোমেনিন এ খোৎবায় তাঁর নিজের একজন অনুচরকে উদ্দেশ্য করেছিলেন যিনি আল্লাহর রাসুলের ইনতিকালের সাথে সাথে যে সব ফেতনা ও অনৈক্য দেখা দিয়েছিল তার পূর্বেই মারা গেছেন ।
ইবনে আবিল হাদীদ”**তার গ্রন্থে বাহারানীর উপরোক্ত মতো সমর্থনও করেছেন (১৪শ খন্ড, পৃঃ ৪)।
আল্লামা আলহাজ্ব মীর্জা হাবিবুল্লাহ আল-খুই’ (১৪শ খন্ড, পৃঃ ৩৭৪-৩৭৫) মত প্রকাশ করেন যে, এ খোৎবায় আমিরুল মোমেনিন যার উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলেছিলেন তিনি হলেন মালিক ইবনে হারিছ। আলআশতার। মালিক নিহত হবার পর মুসলিম উম্মাহর যে অবস্থা হয়েছিল এ খোৎবায় তাই বর্ণিত হয়েছে। খুই আরো উল্লেখ করেন ? আমিরুল মোমেনিন। বিভিন্ন সময়ে মালিকের প্রশধ্বংসা করতেন । মালিককে মিশরের গভর্ণর নিয়োগ করে মিশরের জনগণের কাছে যে পত্র লিখেছিলেন তাতে তিনি বারংবার মালিকের ভূয়সী প্রশধ্বংসা করেছিলেন । মালিক নিহত হবার সংবাদ যখন আমিরুল মোমেনিন পেয়েছিলেন তখন তিনি বললেন, “মালিক! কে এ মালিক? যদি মালিক পাথর হতো তাহলে সো শক্ত ও কঠিন পাথর / যদি মালিক পাহাড় হতো। তবে সে মহান পাহাড় যার কোন তুলনা হয় না । মালিকের মতো আরেক জনকে প্রসব করতে নারীগণ বন্ধ্যা হয়ে গেছে|” কোন কোন বর্ণনায় দেখা যায়। আমিরুল মোমেনিন বলেছিলেন, “আমি রাসুলের কাছে যেরূপ ছিলাম মালিক আমার কাছে ত্ৰিদ্ধাপ | ” সুতরাং আমিরুল মোমেনিনের কাছে যার মর্যাদা এত সমুচ্চ তার সম্পর্কেই এ খোৎবার উক্তিগুলো যথার্থ। যদি খোৎবাটি খলিফা উমর সম্পর্কে বলা হতো। তবে তা ইতিহাসে উল্লেখ থাকতো, মানুষের তা জানা থাকতো এবং হাদীদও সূত্র উল্লেখ করতে পারতো। কিন্তু একথার সত্যতা সম্পর্কে কোন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। শুধুমাত্র কয়েকটি বানোয়াট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ খোৎবায় দুটো সর্বনাম ব্যবহৃত হয়েছে-‘খায়রাহা’ ও “শাররাহা’। হাদীদ এ দুটো সর্বনামকে খেলাফতের সর্বনাম হিসাবে উল্লেখ করে লেখেছেন যে, এ শব্দদ্বয় শুধু তার প্রতি প্রযোজ্য যিনি শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেন। কারণ শাসন ক্ষমতা ছাড়া সুন্নাহ প্রতিষ্ঠিত করা ও বিদা’ত প্রতিহত করা অসম্ভব। হাদীদের এসব উক্তির সমর্থনে কোন ঐতিহাসিক সত্যতা নেই এবং যুক্তিতর্কেও এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। মানুষের স্বার্থসংরক্ষণ ও সুন্নাহ প্রতিষ্ঠিত করার পূর্বশর্ত হিসাবে তিনি শাসন ক্ষমতার কথা উল্লেখ করেছেন। তার এ কথা দ্বারা বুঝা যায় যে, কল্যাণের পথে যাওয়া ও পাপ থেকে সরে থাকার আদেশ দানের ক্ষমতা শাসনকর্তা ছাড়া আর কারো নেই। অথচ, আল্লাহ শাসন ক্ষমতার শর্ত ছাড়াই একদল লোককে এ দায়িত্ব অৰ্পণ করেছেন ঃ তোমাদের মধ্যে এমন একদল হোক যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং সৎকার্যের আদেশ দেবে ও অসৎকার্যে নিষেধ করবে; এরাই সফলকাম (কুরআন- ৩ ৪ ১০৪) |
একইভাবে রাসুল (সঃ) বলেছিলেনঃ যে পর্যন্ত মানুষ ভালো কাজে আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করতে থাকবে এবং দ্বিনে ও তাকওয়ায় একে অপরকে সাহায্য করতে থাকবে সে পর্যন্ত তারা ন্যায়ের পথে থাকবে /
আমিরুল মোমেনিনও বলেছিলেন ? আল্লাহর তৌহিদ ও সুন্নাহয় প্রতিষ্ঠিত থেকে এবং এ দুটি প্রদীপ সর্বদা প্ৰজ্বলিত রেখো ।
এসব বাণীতে এমন কোন ইঙ্গিত নেই যে শাসন ক্ষমতা ছাড়া এ দায়িত্ব পালন করা যাবে না। ঘটনা প্রবাহে দেখা গেছে যে, শাসন ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সৈন্যবাহিনী থাকা সত্ত্বেও শাসক ও বাদশাহগণ ততটুকু অকল্যাণ প্রতিহত ও ধর্ম প্রচার করতে পারে নি যতটুকু পেরেছিল পূণ্যাত্মা অজ্ঞাত ব্যক্তিগণ তাদের সদাচরণ ও নৈতিক মূল্যবোধের ছাপ অন্যের হৃদয়ে ফেলে। তারা কখনো সেনাবাহিনীর সহায়তা গ্ৰহণ করে নি। এমনকি অভাব অনটন ছাড়া তাদের আর কোন অস্ত্রপাতিও ছিল না। একথা ঠিক যে, শাসন ক্ষমতা মানুষের মাথা নোয়াতে পারে কিন্তু হৃদয় জয় করে ধর্মভাব সৃষ্টি করতে পারে না। ইতিহাসে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, অনেক শাসক ইসলামের বৈশিষ্ট্য বিনষ্ট করে দিয়েছিলো। দারিদ্র ও দুঃখ যাদের নিত্য সাখী এমন অসহায় পূণ্যাত্ম্যাগণের প্রচেষ্টায় ইসলামের অগ্রগতি ও অস্তিত্ব টিকে আছে।
[ভারতবর্ষে যে অসহায় ও নিঃস্ব পূন্যাত্মা ইসলাম প্রচার করে লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে ইসলামের ছায়াতলে এনেছিলেন তিনি হলেন হজরত খাজা মঈন উদ্দিন হাসান চিশতি। প্রবল প্রতাপান্বিত রাজা পৃথুিরাজ চৌহানের সকল ক্ষমতা উপেক্ষা করে এ অসহায় দরবেশ তাঁর মহৎ চরিত্র, আচরণ মাধুরী ও মানবতাবোধ দিয়ে মানুষকে ইসলামের তথা তৌহিদের মূল মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে মুসলিম করেছিলেন যাতে চৌহান রাজত্বের ভিতে নাড়া পড়েছিল। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামী রেনেসাঁর অগ্রপথিক (পৃঃ৯)-গ্রন্থে যথার্থই বলা হয়েছে, “এ উপমহাদেশে যারাই ইমান ও ইসলামের মহামূল্যবান সম্পদের অধিকারী হয়েছেন এবং কেয়ামত পর্যন্ত হবেন তাদের সন্তান-সন্ততি ও অধঃস্তন বংশধরগণ সবাই শায়খুল ইসলাম খাজা মঈন উদ্দিন হাসান চিশতির আমলনামার অন্তর্ভুক্ত”— বাংলা অনুবাদক] যদি আমিরুল মোমেনিনের উক্তি শাসকের উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকে। তবে তা সালমান আল-ফারিসীর মতো সাহাবির জন্য হওয়াই যুক্তিযুক্ত যিনি একটা প্রদেশের প্রধান ছিলেন এবং যার দাফনে যোগ দেয়ার জন্য আমিরুল মোমেনিন সুদূর মাদায়েনে গিয়েছিলেন। এটা যুক্তিসংগত যে, আমিরুল মোমেনিন সালমানের দাফনের পর তার জীবন ও শাসন সম্বন্ধে প্ৰশধ্বংসা করে এ খোৎবা দিয়েছিলেন । আমিরুল মোমেনিন খলিফা উমর সম্পর্কে এ কথাগুলো বলেছিলেন এমন কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায় না। বিশেষ করে উমর সম্পর্কে এমন একটা মোক্ষম উক্তি উমর প্রেমিকগণ ফলাও করে প্রচার না করে ছাড়তো না। যাহোক ইবনে আবিল হাদীদ তার অনুমানের (Hypothesis) প্রমাণ হিসাবে ঐতিহাসিক আবুল ফিদার নিম্নোক্ত বর্ণনা উল্লেখ করেনঃ মুঘিরা ইবনে শুবাহ থেকে বর্ণিত আছে যে, খলিফা উমর মারা যাবার পর ইবনাহি আবি হাছমাহ কেন্দে কেন্দে বলেছিল, “হে উমর, তুমি সে ব্যক্তি যে বাকাকে সোজা করেছিলো, পীড়া দূরীভূত করেছিলো, ফেতনা ধ্বংস করেছিলো, সুন্নাহ পুনুরুজ্জীবিত করেছিলো, সততা রক্ষা করেছিলো এবং কোন পাপে না জড়িয়ে চলে গেছো /* ফিদা আরো উল্লেখ করে যে, মুঘিরা বলেছিলো, “উমরকে দাফন করার পর আমি আলীর নিকট এসেছিলাম এবং উমর সম্পর্কে তার কাছে কিছু কথা শুনতে চেয়েছিলাম / তখন আলী তাঁর গোসল সেরে একখানা চাদরে নিজকে জড়িয়ে চুল ও দাড়ি বাড়ছিলেন । পরবর্তী খলিফা হওয়া সম্বন্ধে তার কোন সন্দেহ ছিল না । তিনি বললেন, “আল্লাহর আশীর্বাদ উমরের ওপর বর্ষিত হোক । ইবনাহ আবি হাছমাহ সঠিকভাবেই বলেছে যে, উমর খিলাফতের কল্যাণ উপভোগ করেছেন এবং এর অমঙ্গল থেকে নিরাপদ ছিলেন । আল্লাহর কসম, সে (হাছম”) একথা নিজের থেকে বলেনি—এটা তাকে দিয়ে বালানো হয়েছে । (ফিন্দা ”, ১ম খন্ড, পৃঃ ২৭৬৩ হাদীদ’, ১২শ খন্ড, পৃঃ ৫; কাহীর’, ৭ম খন্ড, পৃ: ১৪০) /
এ ঘটনার বর্ণনাকারী হলো মুঘিরা ইবনে শুবাহ যে উন্মে জামিলের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল। সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও উমর তাকে শাস্তি প্ৰদান করে নি। এছাড়াও ইতিহাস সাক্ষ্য বহন করে যে, এ মুঘিরাই মুয়াবিয়ার নির্দেশে কুফায় আমিরুল মোমেনিনকে গালিগালাজ করেছিলো। এ রকম একজন বাজে লোকের কথার কতটুকু মূল্য থাকতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। বাস্তব অবস্থা বিশ্লেষণ করলেও মুঘিরার কথার অসাড়তা প্রমাণিত হয়। মুঘিরা বলেছিলো যে, পরবতী খলিফা হবার বিষয়ে আমিরুল মোমেনিনের কোন সন্দেহ ছিল না। তার একথা বাস্তব অবস্থার বিপরীত। কিসের ভিত্তিতে সে একথা বলেছে তা উল্লেখ করে নি। বাস্তবে খেলাফত শুধু উসমানের জন্যই নিশ্চিত ছিলো। কারণ খলিফা মনোনিয়ের জন্য উমর যে কমিটি গঠন করেছিল তার প্রধান সদস্য আবদার না। আমি মানুষের সাথে আলাপ করে দেখেছি তারা সকলেই উসমানকে চায়” (ফিন্দা”, ১ম খন্ড , পৃঃ ১৬৬; তাবারী’, ১ম খন্ড, পৃঃ ২৭৮৬, আইরি, ৩য় খন্ড, পৃঃ ৭১)। পেরেছিলেন যে, তিনি খেলাফত পাবেন না। যা ৩নং খোৎবার টীকায় বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। তাই তিনি তার চাচা আব্বাস ইবনে আবদাল মুত্তালিবকে বলেছিলেন যে, উসমান ছাড়া আর কাউকেও খেলাফত দেয়া হবে না। কারণ এ বিষয়ে সকল ক্ষমতা আবদার রহমান ইবনে আউফ ও সাদ ইবনে ওয়াক্কাসকে দেয়া হয়েছে। আবদার রহমান হলো উসমানের ভগ্নিপতি এবং সাদ তার আত্মীয় ও গোত্ৰোদ্ভূত। এ দুজন যে কোন উপায়ে উসমানকে খেলাফত দেবেই। এখানে একটা প্রশ্ন ওঠে যে, উমর নিজেই যখন উসমানের খেলাফত পাবার পথ পাকাপোক্ত করে গেছেন সেখানে মুঘিরা কী জন্য উমর সম্পর্কে আমিরুল মোমেনিনের কাছে কিছু জানতে চেয়েছিল। এ অবস্থায় উমরের প্রতি আমিরুল মোমেনিনের মনোভাব নিশ্চয়ই মুঘিরার জানা ছিল। অপরপক্ষে পরামর্শক কমিটি যখন শর্ত আরোপ করেছিল যে, যিনি খলিফা হবেন তাকে তার পূর্ববতী খলিফাদ্বয়ের নীতিপ্রকৃতি মেনে চলতে হবে। আমিরুল মোমেনিন এ শর্ত মেনে নেন নি। বরং তিনি বলেছিলেন যে, পূর্ববর্তী খলিফাদ্বয়ের নীতি-প্রকৃতি যদি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী হয় তবে কে তা অমান্য করবে? আর যদি তা কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী হয়ে থাকে। তবে কে তা পালন করবে? আমিরুল মোমেনিন বলেছেন উমর সুন্নাহ প্রতিষ্ঠিত করেছে ও বিদা’ত বিনষ্ট করেছে বলে মুঘিরা যে উক্তি করেছে তা ওপরের বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয় না। উমর যদি সুন্নাহ প্রতিষ্ঠিত করেই থাকে। তবে তার নীতি না মেনে সুন্নাহ মান্য করার কোন অর্থ হয় না। সুতরাং মুঘিরার বক্তব্য বানোয়াট ছাড়া আর কিছুই নয়।