অমনোযোগী ব্যক্তি সম্পর্কে আল্লাহ তাদের সময় মঞ্জর করেছেন। তারা অবহেলাকারী ব্যক্তিদের সাথে এসে ভ্রমে পতিত হচ্ছিলো এবং চলার কোন রাস্তা বা পথ দেখানোর ইমাম ছাড়া পাপীদের সাথে প্রত্যুষে চলে যায়। অবশেষে আল্লাহ যখন তাদের পাপের পরিণাম তাদের কাছে স্পষ্ট করবেন এবং তাদের অমনোযোগিতার পর্দা থেকে তাদেরকে বের করে আনবেন তখন তারা সেদিকে এগিয়ে যাবে যেদিক থেকে পালিয়ে এসেছিল এবং যে দিকে তারা যাচ্ছিলো সেদিক থেকে পালিয়ে যাবে। যে অভাব তারা মিটিয়েছিল বা যে কামনা তারা পূর্ণ করেছিল তা থেকে তারা উপকৃত হবে না।
এ অবস্থা থেকে আমি তোমাদেরকে ও আমার নিজেকে সতর্ক করি। মানুষ তার নিজের থেকেই উপকৃত হতে পারে। নিশ্চয়ই, সে ব্যক্তি বুদ্ধিমান যে শোনে ও তা নিয়ে চিন্তা করে; যে দেখে ও পর্যবেক্ষণ করে; যে শিক্ষামূলক বিষয়বস্তু থেকে লাভবান হয় এবং পরে সুস্পষ্ট পথে চলে। সেপথে চললে সে খাদ-খন্দকে পতিত হওয়া থেকে বেঁচে যায় ও পথভ্রষ্ট হয়ে চোরাগার্তে আপতন থেকে রক্ষা পায়। সত্যবাদিতার দিক থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যারা তাকে গোমরাহির দিকে নিয়ে যেতে চায় সে তার কথা পরিবর্তন করে অথবা সত্যের ভয়ে তাদেরকে সহায়তা করে না ।
হে শ্রোত্মন্ডলী, তোমরা নেশাগ্রস্থতা থেকে মুক্ত হও, তন্দ্রা থেকে জেগে ওঠে, তোমাদের দুনিয়ামুখি তৎপরতা কমিয়ে ফেলো, উম্মি’ নবির মাধ্যমে যেসব অপরিহার্য ও বাধ্যতামূলক বিষয়াদি তোমাদের কাছে এসেছে তা ভালোভাবে ভেবে দেখ। তোমরা সেসব লোক থেকে দূরে থেকে যারা তাঁর বিরোধিতা করে এবং যা তারা নিজেদের মনোমত গ্রহণ করেছে তা ত্যাগ কর। আত্মশ্লাঘা পরিহার কর, উদ্ধত স্বভাব ত্যাগ কর এবং কবরকে স্মরণ কর, কারণ সময় তোমাদের সেদিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তোমরা অন্যের সঙ্গে যেরূপ ব্যবহার করবে সেরূপ ব্যবহার পাবে, তোমাদের যেমন কর্ম তেমন ফল হবে। এবং আজ যা প্রেরণ করবে। কাল তাই ফেরত পাবে। সুতরাং তোমাদের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় কর এবং হিসাব-নিকাশের দিনের জন্য কিছু সৎ আমল আগেই প্রেরণ করা। ভয় কর, ভয় কর, হে শ্রোতৃমন্ডলী! আমল কর, আমল কর, হে বেখবর! কেউ তোমাদেরকে আমার মতো সতর্ক করবে না।
প্রাজ্ঞ-স্মারকে (কুরআন) আল্লাহর দৃঢ় সিদ্ধান্ত রয়েছে যে, যদি কেউ ইবাদতের সময় আল্লাহর অংশীদারে বিশ্বাস করে, অথবা কাউকে হত্যা করে নিজের ক্ৰোধ প্রশমিত করে, অথবা অন্যের আমলের সমালোচনা করে, অথবা আত্মস্বর্থ চরিতাৰ্থ করার জন্য নিজের দ্বিনে বেদা’তের প্রক্ষেপ ঘটায়, অথবা দ্বিমুখী স্বভাব নিয়ে মানুষের সঙ্গে চলে, অথবা দ্বিমুখী কথা বলে মানুষের সাথে মেলামেশা করে, তবে সে যতই সচেষ্ট হোক আর আন্তরিকভাবে আমল করুক না কেন তওবা করা ব্যতীত এ দুনিয়া ত্যাগ করে আল্লাহর কাছে চলে গেলে তার আমল কোন উপকারে আসবে না। কুরআনের এ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আল্লাহ পুরস্কার অথবা শাস্তি প্ৰদান করেন এবং এর মাধ্যমে তিনি পছন্দ অথবা অপছন্দ করে থাকেন। এটা বুঝে নাও কারণ উদাহরণ এর সাদৃশ্যের জন্য উত্তম দেশনা।
পশু তার পেট নিয়েই উদ্বিগ্ন। হিধ্বংস্র প্রাণী অন্যকে আক্রমণ করায় উদ্বিগ্ন। নারী অমর্যাদাকর জীবনের আভরণ ও ফেতনাই সৃষ্টিতে উদ্বিগ্ন। অপরপক্ষে ইমানদারগণ বিনয়ী, আল্লাহর প্রশধ্বংসাকারী ও আল্লাহর ভয়ে ভীত ।
১। রাসুল (সঃ) সম্বন্ধে “উম্মি” শব্দটি কুরআনের সূরা আরাফের ১৫৭-১৫৮ আয়াতে (৭ ঃ ১৫৭-১৫৮) ব্যবহৃত হয়েছে। এর বিশদ ব্যাখ্যা জানার জন্য কুরআনের তফসির দ্রষ্টব্য।
২। ইবনে আবিল হাদীদ লেখেছেন যে, জামালের যুদ্ধে বসরা অভিমুখে যাত্রাকালে এ খোৎবা প্ৰদান করেন। বসরার গোলযোগের মূল কারণ ছিল একজন নারীর (আয়শা) ইন্ধন। সে কারণে পশু ও হিধ্বংস্র প্রাণীর স্বভাব উল্লেখ করে নারীর মধ্যে তা বিদ্যমান আছে বলে আমিরুল মোমেনিন অভিমত ব্যক্ত করেন এবং তার ফলশ্রুতিই জামালের যুদ্ধ, যাতে হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছিল।