———- ইজতিহাদ ——————–
অতীত , বর্তমান ও ভবিষ্যত ।
জীবনের ঘটনাপ্রবাহ কেবল মহানবীর (সাঃ) সময় যা ঘটেছে তার মধ্যেই সীমাবদ্ব নয় ।
সর্বদা যুগ ও কালের পরিবর্তনের ফলে নিত্য নতুন ঘটনা প্রবাহের জন্ম দেয় । স্বভাবতই প্রতিটি নতুন ঘটনাই স্বয়ং এক একটি স্বতন্ত্র হুকুমের মুখাপেক্ষী ।
আরও সহজভাবে বলতে গেলে , যুগের আবর্তনে বিভিন্ন নতুন নতুন সমস্যা হতেই পারে । এবং সেই সব সমস্যার সমাধানও সেই সময়কার পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে সমাধান দিতে হবে ।
যেমন , বৃিটিশ আমলের আইন দিয়ে বর্তমান সময়ের সমস্যা সমাধান এক অর্থে অবাস্তব এবং অযৌক্তিকও বটে ।
এ বিষয়ের আলোকে ইজতিহাদের দ্বার খোলা থাকা ইতিহাসের দীর্ঘ পরিক্রমায় আবশ্যকীয়রুপে প্রতীয়মান হয় ।
তাহলে এটা কি করে সম্ভব যে , ইসলাম একটি পরিপূর্ন ও সার্বজনীন দ্বীন রুপে নতুন উদ্ভাবিত সমস্যার ক্ষেত্রে নিশ্চুপ বসে থাকবে এবং মানুষকে ইতিহাসের ঘূর্নাবর্তে দায়িত্বহীনরুপে ছেড়ে দেবে ।
জী পাঠক ,
খুবই পরিতাপের বিষয় হলো , ৬৬৫ হিজরী থেকে আহলে সুন্নাতের আলেমদের জন্য নিরংকুশ ইজতিহাদের দ্বার বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । ইজতিহাদ মাযহাবের সুনির্দিষ্ট অবকাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ব হয়ে পড়েছে ।
নিঃসন্দেহে যা সত্যানুসন্বিৎসু ও স্বাধীনভাবে আল্লাহর হুকুম উদঘাটনের ক্ষেত্রে শর্তের আদর্শে হাত পা বেধে দেয় ।
আহলে সুন্নাতের বর্তমান মাওলানা বা আলেমদের জ্ঞানের বহর বা কথাবার্তার ধরনের দিকে দৃষ্টিপাত করলেই এই দৈন্যতা সহজেই ধরা পড়ে ।
বার ইমামীয়া শীয়া ফকিহরা কিতাব সুন্নাহ , ইজমা ও আক্বলের ভিত্তিতে ইজতিহাদ করে থাকে , যার সত্য ও ইসলামি মারেফত অনুধাবন করাই তাদের প্রচেষ্টা এবং শরীয়তগত দলিলের আনুগত্যকরন ব্যতীত তাদের জন্য আর কোন শর্ত বেধে দেয়া হয় নি ।
ফলে এ মাযহাবের আলেমগন এ প্রানবন্ত ও অব্যাহত ইজতিহাদের আলোকে ও পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সাথে সম্পর্কিত সময় উপযোগী এক পরিপূর্ন ফিকাহর উদ্ভাবন করেছেন এবং জ্ঞানের এক বিশাল রত্নভান্ডার আবিস্কার করেছেন ।
এক প্রানবন্ত ও প্রানসঞ্চারী ফিকাহর উৎপত্তিতে যেটা শীয়া আলেমদেরকে সাহায্য করেছিলো তা হলো , এ মাযহাব সূচনালগ্ন থেকে কোন মৃত ব্যক্তির তাকলীদ বা অনুসরন নিষিদ্ব করেছে । এবং জীবিত মুজতাহিদের তাকলীদ করতে আদেশ প্রদান করে । কারন সমাজ ও সময়ের স্পন্দন তার নখ দর্পনে ।
এ কারনেই বাস্তবতার নিরিখে খুব সংখ্যক ক্ষেত্রই আছে , যেখানে শীয়াদের ফিকাহ আহলে সুন্নাতের চার মাযহাবের কোনটির সাথেই মেলেনি ।
—ইমামিয়া বিশ্বাসের সনদ –
অনুবাদে- মাঈন উদ্দিন-
পৃষ্ঠা ২২১ ছায়া অবলম্বনে ।
SKL