– -সুরা তওবা এবং হযরত আবু বকর —
মুসনাদে হাম্বাল বর্ননা করেছেন যে ,
নবম হিজরীতে মহানবী (সাঃ) হযরত আবু বকরকে সুরা তওবার কয়েকটি আয়াত প্রদান করে মক্কার কুরাইশদের উদ্দেশ্যে তা পাঠ করে শুনানোর নির্দেশ দিলেন ।
রাসুল (সাঃ) এর নির্দেশ মোতাবেক হযরত আবু বকর রওয়ানা হয়ে গেলেন ।
এর কিছুক্ষন পরে নবীজী (সাঃ) হযরত আলী (আঃ) কে নিজের বাহনটি দিয়ে বললেন ,
” হে আলী ! যেখানেই আবু বকরকে পাও , তার হতে তা গ্রহন করে তুমি নিজে তা পাঠ করে শোনাবে ” ।
হযরত আলী (আঃ) জুহফা নামক স্থানে হযরত আবু বকরের সাথে মিলিত হয়ে তার নিকট থেকে আয়াতগুলো গ্রহন করেন এবং নবীজী (সাঃ) এর নির্দেশ মোতাবেক তা প্রচার করেন ।
আহম্মাাদ ইবনে হাম্বল এ প্রসংগে বলেন যে ,
হযরত আবু বকর বিষন্ন মনে মদীনাতে নবীজী (সাঃ) এর নিকট ফিরে এসে প্রশ্ন করলেন ,
” আমার ব্যাপারে কিছু নাজিল হয়েছে কি ? ”
রাসুল (সাঃ) বললেন , ” না , তবে জীবরাইল (আঃ) এসে আমাকে বলেছেন , এ দায়িত্ব যেন স্বয়ং আমি পালন করি অথবা ঐ ব্যক্তি যে আমার আল ( আমার রক্তজ বংশ ) থেকে তাঁকে প্রচার করতে হবে ” ।
সূত্র – তাফসীরে কানজুল ঈমান ,পৃ- ৩৪৬ , ৩৪৭ ( আহমাদ রেজা খাঁ বেরেলভী ) , তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড-১০ ,পৃ- ১০৬ (মাওঃ আমিনুল ইসলাম ) , সীরাতে ইবনে হিশাম , খন্ড-৪ ,পৃ- ২০০ – ২০৪ ( ইসলামিক ফাউন্ডেশন ) , সহীহ বুখারী , খন্ড-৪ , হাদিস- ৪২৯৪ , ৪২৯৫ (আধুনিক) , কাতেবনে ওহী , পৃ-১৫৫ (ইঃফাঃ) , তাফসীরে দুররে মানসুর , খন্ড-৩ ,পৃ- ২০৮ / শেখ আব্দুর রহীম গ্রন্থাবলী , খন্ড-১, পৃ- ৩০৪ (বাংলা একাডেমী ) / ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত , পৃ- ৩৩৮ (উর্দু) / মুসনাদে হাম্বল, খঃ-১,পৃ- ১৫১ , খঃ-৩,পৃ- ২৮৩, খঃ-৪,পৃ- ১৬৪ / ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালীউল্লাহ , খন্ড – ১ , পৃ- ৪০৯ (উর্দ্দু) / ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত , পৃ- ৩৩৮ (উর্দ্দু) / আরজাহুল মাতালেব , পৃ- ৮১৪- ১৮ (উর্দ্দু) / বাইহাক্কী , পৃ- ২২৪ / কানজুল উম্মাাল , খন্ড – ১, পৃ- ২৪৬ / মুসনাদে হাম্বল , খন্ড – ১ , পৃ- ১৫১ , খন্ড- ৩ , পৃ- ২৮৩ / খন্ড- ৪ , পৃ- ১৬৪ / কিফায়াতুত তালিব , পৃ- ১২৫ / মাজমাউজ জাওয়াবেদ , খন্ড – ৭ , পৃ- ২৯ / সাওয়ায়েকে মোহরেকা , পৃ- ১৯ / জামেউল বায়ান , (তাবারী) খন্ড – ১০ , পৃ- ৪১ / খাসাইসুল আলাভী , পৃ- ১৪ / যাখাযেরুল উকবা , পৃ- ৬৯ / বিয়াজুন নাজরাহ , পৃ- ১৪৭ / আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া , খন্ড – ৫ , পৃ- ৩৮, খন্ড – ৭, পৃ- ৩৫৭ (মিশর) / তাফসীরে ইবনে কাসীর, খন্ড – ২ , পৃ- ৩৩৩ (মিশর) ।
সুপ্রিয় পাঠক ,
মহান আল্লাহর প্রতিটি কার্যের পিছনে অবশ্যই শিক্ষনীয় কিছু থাকবেই থাকবে ।
মহানবী (সাঃ) পবিত্র ক্বাবা গৃহের পবিত্রতা রক্ষার্থে আল্লাহর নির্দেশে এমন কাউকে প্রচারের দায়িত্ব দিতে হবে যে , ঐ ব্যক্তি জীবনে এক মুহূর্তের জন্য মূর্তির সামনে মাথা নত করেনি ।
ঐ ব্যক্তিকে অবশ্যই আল্লাহ কতৃক ঘোষিত পুতঃপবিত্র মাছুম হতে হবে ।
পবিত্র ক্বাবা ঘরের পবিত্রতার ঘোষনা পবিত্র ব্যক্তির মাধ্যমেই হওয়া উচিৎ ।
এ ঘটনার মাধ্যমে এটাই আল্লাহ আমাদের শিক্ষা দিলেন ।
সাথে সাথে এটাও প্রমানিত হল যে ,
নবীজী (সাঃ) এর জীবদ্দশায় পবিত্র কোরআনের কয়েকটি মাত্র আয়াত প্রচার করার যোগ্যতা যিনি রাখেন না , তিনি নবীজী (সাঃ) এর ওফাতের পরে মহানবী (সাঃ) এর স্থলাভিষিক্ত খলীফা অথবা সম্পূর্ন কোরআন প্রচারের দায়িত্ব কিভাবে পায় ?
সমস্ত সাহাবাগন এই বিষয়টি সম্বন্ধে সম্পূর্ন একমত যে , জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি হযরত আলী (আঃ) কস্মিনকালেও মূর্তিপূজা , মূর্তি পুজার পুরোহিত ছিলেন না ।
কারন হযরত আলী (আঃ) এর জন্ম হয়েছে খোদ ক্বাবা গৃহের এক্কেবারে অভ্যন্তরে ও উনি এই দুনিয়া ত্যাগ করেছেন মসজিদ থেকে ।
জন্ম থেকে লালন পালন , শিক্ষা দীক্ষাসহ সকল কিছুই মহানবী (সাঃ) এর হাতেই সম্পাদিত হয়েছে ।
নবী (সাঃ) এর ভাষায় –
“– আমি জ্ঞানের নগরী , আলী সেই জ্ঞান নগরীতে প্রবেশের একমাত্র দরজা — ” ।
পক্ষান্তরে নবীজী (সাঃ) এর বেশীর ভাগ সাহাবাগন জীবনের বেশীর ভাগ সময় মুশরিক , মূর্তি পূজারী , মূর্তি পূজারীর পুরোহিত ছিলেন ।
পাঠক ,
আজন্ম লালিত সব কিছুই নতুন ভাবে চিন্তা করুন , প্লীজ ।
— মারেফাতে ইমামত ও বেলায়েত ,
মূল – মোঃ নাজির হোসাইন
পৃষ্ঠা – ৯১ , ৯২ ছায়া অবলম্বনে ।
SKL