আল-হারিছ (ইবনে আবদুল্লাহ আল-আওয়ার) আল-হামদানীর প্রতি কুরআনের রাজুকে শক্ত করে ধরো এবং এর আদেশ-নিষেধ মেনে চলো। কুরআন যা অবৈধ করেছে তা অবৈধ মনে করো এবং যা বৈধ করেছে তা বৈধ মনে করো। অতীতে যা ন্যায় ছিল তা পরীক্ষা করে নিয়ো। অতীত থেকে বর্তমানের জন্য শিক্ষা গ্ৰহণ করো। কারণ দুনিয়ার এক পর্যায় অন্য পর্যায়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ এবং এর সমাপ্তি হলো প্রারম্ভ থেকে শুরু করা। এর সবকিছু হলো শুধু প্রস্থান আর পরিবর্তন। আল্লাহর নামকে কল্পনাতীত মহৎ মনে করো। সর্বদা মৃত্যুকে স্মরণ করো এবং মৃত্যুর পরের অবস্থা চিন্তা করো। নিজকে একটা সুন্দর অবস্থায় উন্নীত করার আগে মৃত্যুর প্রত্যাশা করো না। সে কাজগুলো পরিহার করে চলো যা কেউ নিজের জন্য পছন্দ করে অথচ সাধারণ মুসলিমের জন্য অপছন্দ করে। সেসব কাজ এড়িয়ে চলো যা গোপনে সম্পাদিত হলেও প্রকাশ পেলে লজ্জা পেতে হয়। সেসব কাজও এড়িয়ে চলো যে জন্য নিজেই নিজকে প্রশ্ন করলে তা মন্দ মনে হয় অথবা ওজর দাড় করাতে হয়। তোমার সম্মান জনগণের আলোচনার বিষয় বস্তু হয়ে পড়ে এভাবে নিজকে প্রকাশ করো না। যা কিছু তুমি শুনতে পাও তার সব কিছু জনগণের কাছে বলে দিয়ে না- কারণ তাতে মিথ্যা থাকতে পারে। মানুষ তোমার কাছে যা বলে তার সব কিছুতে প্রতিযোগিতা করতে যেয়ো না, কারণ এতে অজ্ঞতা প্ৰকাশ পাবে। ক্রোধকে দমন করে রেখো এবং যখন শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা থাকবে তখনও ক্ষমা করো। প্রবল ক্ৰোধে ধৈর্যধারণ করো এবং ক্ষমতার পরিবর্তে ক্ষমা প্ৰদৰ্শন করো; ফলশ্রুতিতে পরিণাম তোমার অনুকূলে আসবে। আল্লাহ তোমাকে যেসব নিয়ামত দান করেছেন তার সবকিছুতে কল্যাণ অনুসন্ধান করো এবং কোন নেয়ামত অপচয় করো না। তোমার ওপর আল্লাহর নেয়ামতের ফলাফল যেন দৃশ্যমান হয়। জেনে রাখো, ইমানদারদের মধ্যে সেই সব চাইতে বেশি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত যে নিজের ধনসম্পদ থেকে দান করে। কারণ কল্যাণকর যা কিছু তুমি অগ্রে প্রেরণ করবে তা তোমার জন্য জমা হয়ে থাকবে। আর যাকিছু তুমি ফেলে যাবে তা অন্যরা প্রাপ্ত হবে। এমন লোকের সঙ্গ এড়িয়ে চলো যার মতামত সারগর্ভ নয় এবং যার আমল বিস্বাদপূর্ণ। কারণ একজন লোককে তার সঙ্গী-সাখী দ্বারাই বিচার করা হয়। বড় শহরে বসবাস করো, কারণ বড় নগরী মুসলিমদের সম্মেলন কেন্দ্র। সেসব স্থান এড়িয়ে চলো যেখানে গাফেল ও দুষ্ট লোকের সংখ্যা বেশি এবং সেসব এলাকাও এড়িয়ে চলো যেখানে আল্লাহর অনুগত্য করার কথা বললে সমর্থক কম পাওয়া যায়। তোমার চিন্তা-ভাবনাকে সেসব বিষয়ে সীমাবদ্ধ রেখো, যা তোমার জন্য সহায়তা পূর্ণ হবে। কখনো বাজারে বসো না, কারণ বাজার হলো মিলনস্থল ও ফেতনা-ফ্যাসাদের লক্ষ্যস্থল। যাদের ওপর তুমি কর্তৃত্ব করছো তাদের সঙ্গে ঘন ঘন দেখা করো, কারণ এটা হলো ধন্যবাদ প্রকাশের উৎকৃষ্ট পথ।
শুক্রবার দিন নামাজ আদায় না করে ভ্রমণে বের হয়ে না। যদি তুমি আল্লাহর পথে বের হও অথবা এমন কোন ব্যাপারে বের হও যার জন্য পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে। তবে তুমি তা করতে পাের। তোমার সকল কর্মকাণ্ডে আল্লাহকে মেনে চলো, কারণ সব কিছুর চেয়ে আল্লাহর আনুগত্যের গুরত্ববেশি। হৃদয়কে আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন রেখো। ইবাদতে নিমগ্ন থাকার বিষয়ে হৃদয়ে প্রত্যয় রেখো । হৃদয় যখন ঝামেলা মুক্ত ও আনন্দে থাকে তখনই ইবাদতে নিমগ্ন হয়ো; কিন্তু নির্ধারিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অবশ্যই আদায় করো। দুনিয়ার আরাম-আয়েশে ডুবে প্ৰভু থেকে সরে থাকাকালে যদি তোমার মৃত্যু এসে পড়ে সে বিষয়ে সাবধান থেকো। দুষ্টলোকের সংসৰ্গ পরিহার করো, কারণ পাপ পাপকে আনয়ন করে। আল্লাহকে সর্বমহৎ জেনো এবং আল্লাহ্-প্রেমিকদের ভালোবেসো। ক্ৰোধ পরিহার করো, কারণ ক্ৰোধ হলো শয়তানের সৈনিক । এখানেই শেষ করছি।