আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন যে, আমিরুল মোমেনিন যখন বসরার লোকদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে এলেন তখন তিনি (আবদুল্লাহ) যিকার নামক স্থানে আমিরুল মোমেনিনের বক্তব্য শুনতে এসে দেখলেন আমিরুল মোমেনিন তার জুতা সেলাই করছেন। তিনি আমাকে (আবদুল্লাহকে) বললেন, “এ জুতার দাম কত”? আমি বললাম, “এটার এখন কোন মূল্য নেই”। তিনি বললেন, “আল্লাহর কসম, আমি ন্যায় প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং ভ্রান্তি প্রতিহত করেছি; শুধুমাত্র এ বিষয়টি ব্যতীত তোমাদের শাসনকার্য চালনা অপেক্ষা এ জুতা আমার কাছে অনেক বেশি। প্রিয়।” এরপর তিনি মানুষের সম্মুখে বেরিয়ে এসে বললেনঃ
নিশ্চয়ই, আল্লাহ মুহাম্মদকে (সঃ) যখন পাঠিয়েছিলেন তখন আরবদের মধ্যে কেউ বই পড়তে পারতো না অথবা কেউ নবুয়ত দাবি করে নি। তিনি মানুষকে পথ প্রদর্শন করেছিলেন যে পর্যন্ত না তারা সঠিক পথে এসে মুক্তির সন্ধান পেয়েছে। ফলে, তাদের নেতাগণ সোজা হয়ে গেল এবং তাদের অবস্থা নিরাপদ হলো । আল্লাহর কসম, আমি তাদের নেতৃত্বে ছিলাম। যতক্ষণ পর্যন্ত না দেওয়ালসহ (ঘরটি) সুন্দর আকৃতি সম্পন্ন হয়েছিল। আমি কখনো কোন প্রকার দুর্বলতা বা ভীরুতা প্রদর্শন করি নি। আমার বর্তমান পদচারণাও আগের মতে রযেছে। আমি ভ্রান্তি আর অন্যায়কে ততক্ষণ পর্যন্ত ভেদ করতে থাকবো। যতক্ষণ পর্যন্ত না। এর পার্শ্বদেশ থেকে ন্যায় বেরিয়ে আসে। কুরাইশদের সাথে আমার বিবাদের কারণ কী? আল্লাহর কসম, যখন ওরা ইমানহারা ছিল তখন আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি এবং যদি তারা এখনো ভ্রান্ত পথ অনুসরণ করে তবে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। তাদের জন্য বিগত দিনে আমি যেমন ছিলাম আজো তেমনই থাকবো। আল্লাহর কসম, আমাদের প্রতি কুরাইশগণের বিদ্বেষপরায়ণতার কারণ হলো আল্লাহ আমাদেরকে (রাসুল ও তার আহলুল বাইত দ্বারা) তাদের ওপর প্রাধান্য ও মর্যাদা প্রদান করেছেন। সুতরাং আমরা তাদেরকে আমাদের রাজ্যে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছিলাম এবং তাতে তাদের অবস্থা এমন হলো যেমন এক কবি বলেছেনঃ আমার জীবনের কসম, তুমি প্রতিভোরে তাজা দুধ পান করতে থাকো, এবং মাখন দিয়ে উত্তম মানের খেজুর খেতে থাকো; আমরা তোমাকে মহত্ত্ব দিয়েছি যা তোমার কোনদিন ছিল না, এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়া আর শক্ত তীর দ্বারা তুমি এখন প্ররক্ষিত’।
১। আমিরুল মোমেনিনের এ খোৎবাটি ফদক রাষ্ট্রায়ত্ব করায় রাসুলের (সঃ) পবিত্র কন্যা ফাতিমা যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার মতোই। ফাতিমা বলেছিলেনঃ হে লোক সকল তোমরা দোষাখের অগ্নিকুন্ডের প্রান্তে ছিলে (কুরআন, ৩৫,১০৩)। তোমরা এক ঢোক পানির মতো নগণ্য ছিলে । তোমরা ছিলে মুষ্টিমেয় লোভী এবং দ্রুতগামীর বালকের মতো সংখ্যালঘিষ্ট। তোমরা ছিলো পায়ের নিচের ধূলিকণার মতো পদদলিত। তোমরা নোংরা। পানি পান করতে তোমরা টেনিং না করা চামড়া খেতে । তোমরা ছিলে হীনমনা ও ঘূর্ণিত । আল্লাহ তোমাদেরকে আমার পিতা মুহাম্মদের (সঃ) মাধ্যমে উদ্ধার করেছেন ।