সালিসি* সম্পর্কে আমিরুল মোমেনিনের মনোভাবে তাঁর অনুচরগণ অসন্তোষ প্ৰকাশ করলে তিনি বললেনঃ
হে জনমান্ডলী, আমার ও তোমাদের মধ্যে যে ব্যাপার হয়েছে তা হলো আমি চেয়েছিলাম তোমরা নিঃশেষিত হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। আল্লাহর কসম, যদিও যুদ্ধ তোমাদের কিছু লোককে নিয়ে গেছে। তবুও তোমাদের শক্ৰ সম্পূর্ণরূপে দুর্বল হয়ে পড়েছে। গতকাল পর্যন্ত আমি আদেশ দিয়েছিলাম, আর আজ আমি আদিষ্ট হচ্ছি। গতকাল পর্যন্ত অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আমি মানুষকে উপদেশ দিয়েছিলাম, আর আজ আমাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। তোমরা এ পৃথিবীতে বাস করার প্রবল ইচ্ছা দেখিয়েছো । কাজেই তোমরা যা অপছন্দ কর তার প্রতি তোমাদেরকে টেনে আনা আমার পক্ষে সম্ভব নয় ।
১। সিফফিনের যুদ্ধে সিরিয়া সৈন্যগণ যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান হারিয়ে ফেলে পালিয়ে যাবার জন্য যখন প্রস্তুত হয়েছিল তখন মুয়াবিয়া তার চিরাচরিত ধূর্তমির একটা কৌশল হিসাবে কুরআনকে ব্যবহার করেছিল। এতে ইরাকি সৈন্যদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হলো। তারা আমিরুল মোমেনিনের সকল উপদেশ অমান্য করে যুদ্ধে এক পাও এগুতে রাজি হলো না। অধিকন্তু যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তারা জেদ ধরেছিল। এতে আমিরুল মোমেনিন সালিসিতে সম্মতি দিতে বাধ্য হলেন। এসব লোকের মধ্যে কতেক প্রকৃতপক্ষেই প্রতারিত হয়েছিল এবং তারা মনে করেছিল কুরআনকে মেনে চলার জন্যই বুঝি সত্যি সত্যি বলা হচ্ছিলো। আবার কিছু সসংখ্যক লোক দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে সাহস হারিয়ে ফেলেছিল। তারা এ সুযোগে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য চিৎকার শুরু করে দিয়েছিল। আবার এমন কিছু লোক ছিল যারা খেলাফতের ক্ষমতার কারণে আমিরুল মোমেনিনের সঙ্গী হয়েছিল, কিন্তু তারা হৃদয় দিয়ে তাকে সমর্থন করতো না বা তার বিজয়ও কামনা করতো না। এমন কতেক লোক ছিল যারা মুয়াবিয়ার কাছ থেকে অনেক কিছুর আশা পেয়েছিল এবং সেই আশা পূরণের জন্য মুয়াবিয়ার স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য রেখেছিল। এ ছাড়াও এমন কতেক লোক ছিল যারা প্রথম থেকেই মুয়াবিয়ার সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এমন একটা অবস্থায় এবং এমন প্রকৃতির সৈন্য নিয়ে এত বড় একটা যুদ্ধে জয়ের মুখোমুখি হওয়া শুধুমাত্র আমিরুল মোমেনিনের সৈন্য নিয়ন্ত্রণ কৌশল, রাজনৈতিক সক্ষমতা ও প্রশাসনিক দক্ষতার জন্যই সম্ভব হয়েছে। তার সৈন্যগণ মুয়াবিয়ার ধূর্তমির শিকার না হলে তার জয় ছিল সুনিশ্চিত। কারণ সিরিয়দের শক্তি প্রায় নিঃশেষ হয়ে পড়েছিল এবং পরাজয় তাদের মাথার ওপর ঘুরপাক খাচ্ছিলো। এ ব্যাপারে ইবনে আবিল হাদীদ*২ লেখেছেনঃ
মালিক আশীতার মুয়াবিয়ার কাছ পর্যন্ত পৌছে গিয়েছিল এবং তার ঘাড় আঁকড়ে ধরার আল্লা বাকি ছিল । সিরিয়দের সকল শক্তি চুরমার হয়ে পড়েছিল । একটা মৃতো টিকটিকির লেজ
যেভাবে নড়াচড়া করে সিরিয়দের মধ্যে ঠিক ক্ৰন্দ্ৰপ নড়াচড়া পরিলক্ষিত হচ্ছিলো (১১শ খন্ড,
?oo-o2りs