১৫১। প্রত্যেক মানুষই জীবনের অবসানের সাক্ষাৎ লাভ করবে তা সুমিষ্টই হোক আর তিক্তই হোক।
১৫২। প্রত্যেক আগতুককে ফিরে যেতে হবে এবং ফিরে যাবার পর মনে হবে যেন সে কখনো ছিল না।
১৫৩। ধৈর্যশীলগণ কখনো অকৃতকার্য হয় না; হতে পারে, তাতে দীর্ঘ সময় লাগবে।
১৫৪ । কেউ যদি কোন দলের কর্মকান্ডে সম্মতি জানায় তবে সে যেন ওই দলের সাথে যোগদান করলো। এবং যে কেউ অন্যায়ে যোগদান করে সে দুটি পাপ করে; একটি হলো নিজের পাপ আর অপরটি হলো অন্যের পাপে সম্মতি জ্ঞাপন।
১৫৫। চুক্তি মেনে চলো এবং দৃঢ়প্রত্যয় সম্পন্ন লোকের মতো তা পরিপূরণ করতে যত্নবান হয়ো।
১৫৬। যাদের প্রতি তোমরা অজ্ঞতার ওজর দেখাতে পারবে না। তাদের অনুগত থাকার দায় দায়িত্ব তোমাদের ওপর বার্তাবে’ ।
১। আল্লাহ তাব ন্যায় বিচার ও দয়ার কারণে মানুষকে দ্বিনের পথে পরিচালনার জন্যই নবিগণকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। একইভাবে তিনি ইমামত প্রতিষ্ঠিত করেছেন যাতে তাঁরা দ্বিনকে পরিবর্তন ও বেদাত থেকে রক্ষা করেন এবং যাতে করে প্রত্যেক ইমাম তাঁর আমলে ঐশী বিধানকে ব্যক্তিগত কামনাবাসনা ও স্বার্থের জন্য আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারেন এবং ইসলামের সঠিক দিকদর্শন যেন তারা দিতে পারে। তারা যে ভাবে জানা দরকার সেভাবে যেন দ্বিনের মৌলিক উদ্ভাবক রাসুলকে (সঃ) জানতে পারে ও ইমামকে জানাতে পারে। যে তার সময়কার ইমাম সম্পর্কে অনবহিত থাকবে তাকে ক্ষমা করা হবে না। ইমামত ইসূৰ্যটা এত অধিক দলিল পত্র দ্বারা প্রমাণিত যে, কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তিরই ইমামতকে অস্বীকার করার কোন পথ নেই। রাসুল করিম (সঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের সময়কালের ইমামকে না চিনে মৃত্যুবরণ করে সে প্রাক-ইসলামি জাহিলিয়া যুগের মৃত্যুর মতোই মরলো । (তাফতাজিানী”, ২য় খণ্ড, পৃঃ ২৭৫; *, ২য় খণ্ড, পৃঃ ৪৫৭, ৫০৯) । আবদুল্লাহ ইবনে উমর, মুয়াবিয়া ইবেন আবি সুফিয়ান ও আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সঃ) বলেছেনঃ নিজের জমানার ইমামকে না চিনে এবং তার কাছে বায়াত গ্রহণ না করে যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে সে জাহিলিয়া যুগের লোকের মতোই মরলো। আর যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে বায়াত ভঙ্গ করবে। সে শেষ বিচারের দিনে আল্লাহর সম্মুখে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন যুক্তি দাঁড় করাতে পারবে না । (তায়ালিসী”, পৃঃ ২৫৯: নায়সাকুরী ‘, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃঃ ২২, হাম্বল***, ৪র্থ খণ্ড, পৃঃ ৯৬. শাফী***, ৮ম খণ্ড, পৃঃ ১৫৬: কাছীর**, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৫১৭ শাকী’, ৫ম খণ্ড, পৃঃ ২১৮, ২২৪, ২২৫) | ইবনে আবিল হাদীদও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন যে, যার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনবহিত হবার কারণে কাউকে ক্ষমা করা হবে না। তিনি হলেন আমিরুল মোমেনিন। তিনিও স্বীকার করেছেন যে, তাকে মান্য করা সকলের জন্য অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব। তিনি আরো বলেন যে, যে ব্যক্তি ইমামতে বিশ্বাস করবে না। সে কখনো নির্বাণ প্রাপ্ত হবে না। তিনি লেখেছেনঃ ইমাম হিসাবে আলীর অবস্থান সম্পর্কে যে ব্যক্তি অনবহিত এবং যে ইমামের সত্যতা অস্বীকার করে সে জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে । তার সালাত ও সিয়াম তার কোন উপকারে আসবে না কারণ এ বিষয়ের জ্ঞান হলো মৌলিক বিষয় যার ওপর দ্বিনের ভিক্তি নির্ভর করে । যা হোক, যারা জামানার ইমামকে অস্বীকার করে তাদেরকে আমরা কাফের বলতে চাই না, তবে তারা পাপী, সীমা লঙ্ঘনকারী ও ধর্মত্যাগী (হাদীদ’, ১৮ শ খন্ড, ?? ७१b)
১৫৭। নিশ্চয়ই, তোমরা দেখতে পাবে। যদি তোমরা দেখার জন্য যত্নবান হও । নিশ্চয়ই, তোমরা সৎপথের সন্ধান পাবে। যদি তোমরা হেদায়েত গ্রহণ করা। নিশ্চয়ই, তোমরা শুনতে পাবে। যদি তোমাদের কানাকে শোনার জন্য আগ্রাহান্বিত কর ।
১৫৮। তোমার সদাচরণ দ্বারা তোমার সাথিদের সতর্ক কর এবং তাদের প্রতি আনুকূল্য দেখিয়ে তাদের মন্দ রীভূত কর।”
১। যদি মন্দের পরিবর্তে মন্দ করা হয়, গালির পরিবর্তে গালি দেয়া হয় তবে শক্রতা ও বিবাদের দরজাই খুলে দেয়া হয়। কিন্তু একজন মন্দ স্বভাবের লোকের প্রতি যদি দয়া দেখানো হয় এবং যদি ভদ্রোচিত ব্যবহার করা হয় তবে সেও তার আচরণ পরিবর্তন করতে বাধ্য হবে। একদিন ইমাম হাসান মদিনার একটি বাজারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় একজন সিরিয়ান তার মহান ব্যক্তিত্ব দেখে তার পরিচয় জানতে চাইলে লোকেরা বললো, “ইনি হাসান ইবনে আলী।” এতে লোকটি উত্তেজিত হয়ে গেল এবং তার কাছে এসে তাকে গালাগালি করতে লাগলো। ইমাম শান্তভাবে তার গালমন্দ শুনলেন। যখন সে থামলো তখন ইমাম বললেন মনে হয় তুমি এখানে একজন আগন্তুক। সে স্বীকার করলো। তখন ইমাম বললেন তাহলে তুমি আমার সঙ্গে আস এবং আমার সঙ্গেই থাক। তোমার কোন অভাব থাকলে আমি তা পূর্ণ করে দেব। আর যদি তুমি আর্থিক সহায়তা চাও তাও আমি পূরণ করে দেব। লোকটি এ দয়াদ্র কথা ও চমৎকার ব্যবহার দেখে ভীষণ লজ্জিত হয়ে গেল এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করলো। এরপর থেকে সে লোকটি জীবনে ইমামের চেয়ে বেশি শ্রদ্ধাবোধ আর কারো জন্য করে নি (মুবাররদ।***, ১ম খণ্ড, পৃঃ ২৩৫; ২য় খণ্ড পৃঃ ৬৩; শাফী***, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃঃ ৫২: আশরাফ*, ২য় খণ্ড, পৃঃ ১১-১২; শাহরাস শুব***, ৪র্থ খণ্ড, পৃঃ ১৯; মজলিসী***, ৪৩তম খণ্ড, পৃঃ ৩৪৪)।
১৫৯। যে ব্যক্তি নিজকে বদনামপূর্ণ অবস্থায় রাখে তার সম্পর্কে মানুষের মন্দ ধারণা হলে সেজন্য কাউকে দায়ী করা যায় না ।
১৬০। যে কর্তৃত্বের অধিকারী হয়। সেই সাধারণত পক্ষপাতিত্ব করে।
১৬১। যে ব্যক্তি শুধুমাত্র নিজের মতামতের উপর নির্ভর করে কাজ করে সে সহজেই ধ্বংস প্রাপ্ত হয় এবং যে অন্যদের সাথে পরামর্শ করে সে অন্যদের বুদ্ধি-বিবেচনার সুফল প্রাপ্ত হয়।
১৬২। যে নিজের গুপ্ত বিষয় রক্ষা করে সে নিজের হাতেই নিয়ন্ত্রণ সংরক্ষণ করে।
১৬৩। নিঃসঙ্গতা হলো বড় মৃত্যু।
১৬৪। যে ব্যক্তি নিজের অধিকার পরিপূর্ণ করে না অথচ অন্য লকের পরিপূরণ করে সে যেন তার পূজা করলো।
১৬৫। যে আল্লাহর আদেশের বিরুদ্ধে চলে তাকে মান্য করার কোন কারণ থাকতে পারে না।
১৬৬। নিজের অধিকার আদায়ে বিলম্বের জন্য কাউকে দোষারোপ করা যায় না। কিন্তু যা সে প্রাপ্য নয় তা গ্রহণ করলে দোষারোপ করা যায় ।
১৬৭। আত্মশ্লাঘা প্রগতির পথ রোধক।
১৬৮। শেষ বিচারের দিন সন্নিকটে এবং আমাদের পারস্পরিক সহচর্য অত্যাহ্বল্প সময়ের জন্য।
১৬৯। চক্ষুস্মানগণ দেখতে পায় প্রভাত হয়ে গেছে।
১৭০। পাপ করে তওবা করার চেয়ে পাপ হতে বিরত থাকা সহজতর।
১৭১। অধিক ভোজন বিভিন্ন ভোজন বিনষ্ট করে (আরবী প্রবাদ)
১৭২। মানুষ সে বিষয়ের শত্রু যা সে জানে না।
১৭৩। যে ব্যক্তি বিভিন্ন লোকের মতামত গ্রহণ করে সে চোরা-গর্তের ফাঁদ বুঝতে পারে।
১৭৪। যে ব্যক্তি আল্লাহর খাতিরে ক্রোধের দাঁতে ধার দেয় সে অন্যায়ের পলোয়ানকেও হত্যা করার শক্তি অর্জন করে ।
১৭৫। যখন কোন কিছুতে ভয় পাবে সোজা তার গভীরে প্রবেশ করবে। কারণ তুমি যতটুকু ভয় পাও তার অনেক বেশি হলো তা থেকে দূরে থাকার প্রবণতা।