রাসুলের (সঃ) প্রশধ্বংসা আল্লাহ রাসুলকে (সঃ) সাক্ষী, শুভ সংবাদ প্রদানকারী ও সতর্ককারী হিসাবে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের পবিত্রতম শিশু, নিষ্পাপ্যতম যুবক, আচরণে পরিশুদ্ধদের পরিশুদ্ধতম এবং যারা উদারতা চাইত তাদের জন্য উদারতাম ।
উমাইয়াদের সম্পর্কে
এ দুনিয়া আমোদ-প্রমোদে মধুর হয়ে তোমাদের নিকট হাজির হয় নি এবং তোমরা এর বাট থেকে দুধ দোহন কর নি, যে পর্যন্ত না। এর নাকের রশি টেনে ধরেছিলে ও পেটে বাধা বেল্ট ঢিলা করে দিয়েছিলে। কিছু লোকের কাছে দুনিয়ার হারাম জিনিসগুলো ছিল ফলভারে নুয়ে পড়া বৃক্ষ শাখার মতো, আর হালাল জিনিসগুলো ছিল অনেক দূরে—নাগালের বাইরে। আল্লাহর কসম, তোমরা এটাকে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দীর্ঘ প্রতিবিম্বের মতো দেখতে পাবে। সুতরাং কোন বাধা-বিপত্তি ছাড়াই পৃথিবী তোমাদের সাথে আছে এবং এতে তোমাদের হাত সম্প্রসারিত। অপরপক্ষে নেতাদের (ইমামদের) হাত তোমাদের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। তোমাদের তরবারি তাদের ওপর ঝুলছে, কিন্তু তাদের তরবারি তোমাদের ওপর থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে।
সাবধান, প্রতিটি রক্তপাতের জন্য প্রতিশোধ গ্রহণকারী আছে এবং প্রতিটি অধিকারের দাবিদার আছে। আমাদের রক্তের বদলা গ্রহণকারী তার নিজের দাবির বিচারকের মতো। আল্লাহ এমন যে, যদি কেউ তাকে অনুসন্ধান করে, তিনি তাকে হতাশ করেন না। আবার কেউ যদি তার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াতে চায়। তবে সে তার নজর এড়িয়ে যেতে পারে না। আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, হে বনি উমাইয়া, অচিরেই তোমরা দেখতে পাবে যে, তোমাদের দখলিয় সবকিছু অন্যের হাতে ও তোমাদের শত্রুর ঘরে চলে গেছে। জেনে রাখো, সর্বোত্তম দৃষ্টিমান চোখ সেটি যাতে কল্যাণ ধরা পড়ে এবং সর্বোত্তম শ্রুতিমান কান সেটি যাতে ভালো উপদেশ শোনা যায় ও তা গ্রহণ করে।
ইমামদের কাজ সম্পর্কে হে লোকসকল, তোমরা সেই ওয়ায়েজের (নসিহতকারী) দীপ-শিখা থেকে আলো সংগ্রহ করে যিনি । যা নসিহত করেন তা নিজেও অনুসরণ করেন এবং সেই ঝরনা থেকে পানি তুলে নাও যা ময়লা বিমুক্ত করা হয়েছে। হে আল্লাহর বান্দাগণ, তোমাদের অজ্ঞতার ওপর নির্ভর করো না এবং তোমাদের খাহেশের অনুগত হয়ে না। কারণ যে খাহেশ নিয়ে থাকে সে যেন পানি দ্বারা ধ্বংসোনুখ তীরের ঢালু স্থানে থাকে। একের পর এক অভিমত পরিবর্তন করে সে নিজের পিঠে ধ্বংস বহন করে বেড়ায়। যা আমন্ত্রিত হবার নয়। সে চায় তা আমন্ত্রণ করতে এবং যা একত্রে রাখা যায় না সে চায় তা একত্রিত করতে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং যে তোমাদের দুঃখ বিমোচন করতে পারে না তার কাছে অনুযোগ করো না এবং যা তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা করা থেকে তার কথায় বিরত হয়ে না।
নিশ্চয়ই, আল্লাহ যে কাজ অর্পণ করেছেন তা ছাড়া ইমামের আর কোন দায়িত্ব নেই। তা হলো— সতর্কাদেশ পৌছিয়ে দেয়া, ভালো উপদেশ প্রদান করা, সুন্নাহ পুনরুজ্জীবিত করা, যারা শাস্তি পাওয়ার যোগ্য তাদের শাস্তি বিধান করা এবং যারা অংশ পাওয়ার যোগ্য তাদেরকে তা প্রদান করা। সুতরাং জ্ঞানের বৃক্ষ শুকিয়ে যাবার পূর্বেই তার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাও এবং যাদের জ্ঞান আছে তাদের কাছ থেকে জ্ঞান আহরণে নিজকে ফিরিয়ে নেয়ার পূর্বেই তাদের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাও। হারাম কাজ করা থেকে নিজেকে বিরত রেখে এবং অন্যকেও নিবৃত্ত করো, কারণ অন্যকে নিবৃত্ত করার পূর্বে নিজেকে বিরত করতে তোমাদের আদেশ দেয়া হয়েছে।