হজরত জয়নাব (সা.আ.) কিভাবে শাহাদত বরণ করেন এ সম্পর্কে ইতিহাসে বিভিন্ন মতামত বর্ণনা করা হয়েছে।
– কোন কোন স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি পানিতে ডুবে মারা যান। কিন্তু নিন্মে উল্লেখিত পুস্তক সমূহের কোথাও পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়নি। উসদুল গাবা, খন্ড ৭, কিতাবে নিসা, আল এসাবা ফি তামিযিল সাহাবা, খন্ড ৪, কিতাবুন নিসা, তাবাকাত, খন্ড ৮, তারিখে তাবারী, খন্ড ৪, আল আলাম, খন্ড ৩, মোজামে রেজালুল হাদীস, খন্ড ২৪, পৃষ্ঠা ২১৯, বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৪৫, ২৮, ৪৪, ৪২, তারিখে আমাকেনে সিয়াহাতি ওয়া যিয়ারাতি সুরিয়ে, মুনতাখাবুল তাওয়ারিখ, তানকিহুল মাকাল, খন্ড ৩, রিয়াহাইনুশ শারিয়াহ, খন্ড ৩, যিনে্দেগানী যয়নাবে কুবরা, মুনতাহিউল আমাল, খন্ড ১।
– আহলে বাইত (আ.) এর শত্রুরা উক্ত ঘটনাটিকে হজরত জয়নাব (সা.আ.) এর ব্যাক্তিত্বকে জনগণের কাছে ছোট করে দেখানোর বৃথা চেষ্টা করেছিল। আর যদি ঘটনাটি সত্যই হতো তাহলে তিনি তো আর একা ছিলেন না বরং তাঁর সাথে অন্যান্যরাও ছিল তাহলে কেন তাদের পানিতে ডুবে মরার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
– তবে বিভিন্ন ইতিহাসের পুস্তক সমূহে হজরত জয়নাব (সা.আ.) এর মৃত্যু সম্পর্কে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্বাভাবিক মৃত্যুতে তিনি মারা যান। (আল মুনতাখাবুত তাওয়ারিখ, পৃষ্ঠা ৬৭)
আর উক্ত ঘটনাটিই হচ্ছে স্বাভাবিক কেননা তিনি কারবালার পথে যে, কষ্ট সহ্য করেছেন তাতে তাঁর অসুস্থ হওয়াটা হচ্ছে একটা স্বভাবিক বিষয়।
আবার বিভিন্ন রেওয়ায়েতে বর্ণনা করা হয়েছে যে এজিদ তার লোকদের সহায়তায় হজরত জয়নাব (সা.আ.) কে বিষ দানের মাধ্যেমে শহীদ করে। (যেয়নাবে কুবরা মিনাল মাহদে ইলাল লাহাদ, পৃষ্ঠা ৫৯২)
উক্ত কারণগুলোর সাথে হজরত জয়নাব (সা.আ.) এর সাথে এক বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। কেননা তিনি কারবালার ঘটনা দেখেছেন এবং কষ্টও সহ্য করেছেন। আর তাঁর জিবীত থাকা হচ্ছে এজিদের রাজতন্ত্রের জন্য একটি হুমকি স্বরূপ। আর তাই এজিদ কখনই চাইবে না যে তার রাজতন্ত্রের পতন হোক। যদিও বিষয়টি এতই গোপন যে কখনো কেউ চাইবে না যে হজরত জয়নাব (সা.আ.)এর মতো মহীয়সি নারী হত্যার অপরাধ নিজের ঘাড়ে তুলে নিতে।
আর তাই হজরত যায়নাব (সা.আ.) এর শাহাদতের তারিখেও মতভেদ রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ মতে তিনি রোজ রবিবার ১৫ই রজব ৬২ হিজরীতে তিনি শত বিচ্ছেদের বেদনা বুকে নিয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন।