“তাকলীদ”
প্রশ্ন – তাকলীদ কাকে বলে ?
উত্তর – তাকলীদ -এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে অনুসরন করা ।
একজন শিশু তার পিতা ও মাতার তাকলীদ বা অনুসরন করে ।
একজন রুগী কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অনুসরন বা তাকলীদ করে ।
একজন বাড়ী নির্মাতা যে কোন আর্কিটেকচারের স্মরনাপন্ন হন তার বাড়ীটি নির্মানের ক্ষেত্রে ।
এই রকম ভাবে সাধারন মুসলমান অত উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন জ্ঞানী মুজতাহিদ বা মারজাগনের তাকলীদ বা অনুসরন করে থাকেন ।
সুতরাং কোন মুজতাহীদের নির্দেশাবলীর অনুসরণ করাই হচ্ছে তাকলীদ ।
(মাসলা নং- ২)
তাকলীদ সংক্রান্ত বিস্তারিত মাসায়েল —
প্রশ্ন –
তাকলীদ কার জন্য করা কর্তব্য ?
উত্তর –
মানুষ সাধারণভাবে ৩ শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত –
(১) – মুজতাহীদ ,
(২) – মুজতাহীদের কাছাকাছি পর্যায়ের মান সম্পন্ন ব্যক্তি ,
(৩) – সাধারণ মানুষ , যিনি উপরোক্ত দুই শ্রেণীরই বাইরে ।
এখানে উপরের উল্লেখিত ৩য় শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত সকল সাধারণ মানুষের জন্যই কোন না কোন মুজতাহীদের তাকলীদ বা অনুসরণ করা একান্ত বা অপরিহার্য্য কর্তব্য অর্থাৎ ওয়াজিব ।
(মাসলা নং-১)
প্রশ্ন –
কাকে তাকলীদ বা অনুসরন করা উচিত ?
উত্তর –
নিম্ন লিখিত সকল শর্তাবলী বা বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মুজতাহীদকেই তাকলীদ বা অনুরনে করা উচিত –
এখানে প্রথমেই যে প্রশ্নটি সবার মনে আসে তা হ’ল মুজতাহীদ কে এবং কাকে মুজতাহিদ বলা হয় ?
উত্তর – মুজতাহীদ –
মুজতাহীদ হচ্ছেন ইসলামের জ্ঞানে জ্ঞানী এবং কোরান ও হাদীস থেকে নিজের অর্জিত জ্ঞান , পাণ্ডিত্ব ও প্রজ্ঞার সাহায্যে মানুষের জীবনের সাথে জড়িত সকল ধরনের আইন ও নীতি মালা প্রমান সহকারে প্রণয়ন করার মত ক্ষমতা ও যোগ্যতা রাখেন ।
অর্থাৎ এক কথায় ওনাকে ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ ও বলা যেতে পারে ।
অবশ্য এখানে উল্লেখ করা দরকার যে , সকল মুজতাহীদই আলেম , কিন্ত সকল আলেমই মুজতাহীদ নন ।
একজন অনুসরন যোগ্য মুজতাহীদের যোগ্যতার শর্তাবলী —
তাঁকে অবশ্যই —
১) – পুরুষ হতে হবে ,
২) – সাবালক হতে হবে ,
৩) – আকেল বা সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন হতে হবে ,
৪) – আক্বিদাগত ও ফিকহাগত ভাবে পবিত্র ১২ ইমাম (আঃ) গনের অনুসারী বা শীয়া হতে হবে ,
৫) – পিতা-মাতার বৈধ সন্তান হতে হবে (জারজ নয় এমন) ,
৬) – জীবিত হতে হবে ,
৭) – ন্যায় পরায়ন ও দুনিয়া বিমূখ হতে হবে ,
৮) – সমসাময়িক বাকী সকল (জীবিত) মুজতাহীদের তুলনায় অধিকতর জ্ঞানী হতে হবে , এবং
৯) – ইহ্তিয়াতে-ওয়াজীব (সর্তকতামূলক-ওয়াজীব) হচ্ছে , উনি অবশ্যই দুনিয়া লোভী হতে পারবেন না ।
(মাসলা নং-২)
প্রশ্ন – কোন কোন ব্যাপারে মুজতাহীদের তাকলীদ করা ওয়াজীব ?
উত্তর – উসুলেদ্বীন অর্থাৎ দ্বীন-ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসগত (ইমান সংক্রান্ত) ব্যাপারে কারও তাকলীদ বা অন্ধ অনুসরন করা যাবে না ।
এবং দ্বীন ইসলামের ফুরুয়ে-দ্বীন অর্থাৎ ব্যবহারিক-আইনগত অংশের অতি জরুরী ব্যাপারগুলোর বিষয়েও কারও তাকলীদ করা যাবে না ।
যেমন – নামায ও রোজার ওয়াজীব হবার ব্যাপারে , যা কিনা মৌলিকভাবে একটি স্বতঃ সিদ্ধ ও প্রমাণিত ব্যাপার ।
এক্ষেত্রে কোন মুজতাহীদের মতামত গ্রহণের মুখাপেক্ষি হওয়া যাবে না ।
বিঃদ্রঃ – তাক্বলীদ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে হলে পড়ুন –
তাক্বলীদ কি ?
মূল – আয়াতুল্লাহ আলী মিশকিনী ,
অনুবাদ – অধ্যক্ষ আলী আককাস ,
প্রকাশনায় – আজ্ঞুমান – এ – পাজ্ঞাতানী ,
খুলনা , বাংলাদেশ ।
SKL